এশিয়া

মিয়ানমারে গুলিতে নিহত ৭, চীনা কারখানায় আগুন

নেপিডো, ০৭ এপ্রিল – মিয়ানমার সেনাবাহিনী বুধবারও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে। এতে অন্তত আরও সাতজন বিক্ষোভকারী নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে। এদিকে এ দিন বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে একটি চীনা মালিকানাধীন কারখানায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। একইসঙ্গে চীনা পতাকাও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভ, ধর্মঘট, অসহযোগের মতো আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন গণতন্ত্রপন্থীরা। এরমধ্যে দেশটির সামরিক শাসক কর্তৃপক্ষ বলছে, নাগরিক ‘অবাধ্যতার আন্দোলন’ মিয়ানমারকে ‘ধ্বংস করে দিচ্ছে’। খবর রয়টার্সের

মিয়ানমারে প্রায় দুই মাস ধরে চলা বিক্ষোভে অন্তত ৫৮০ জন নিহত হয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। গত ১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থানের পর বিক্ষোভ চলতেই আছে। বিরোধীদের দমন করার জন্য সামরিক বাহিনী প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করলেও দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও ধর্মঘট অব্যাহত।

আরও পড়ুন : ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা পাকাপোক্ত করলেন পুতিন

রয়টার্সকে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, বুধবারও দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কালেতে অং সান সু চির বেসামরিক সরকার পুনরুদ্ধার দাবিতে বিক্ষোভ চলছিল। একপর্যায়ে বিক্ষোকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালান দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সেখানে পাঁচজন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, কালে শহরে বারবার গুলির শব্দ শোনা যায়। এই গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া এ দিন ইয়াঙ্গুনের কাছের বাগো শহরেও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হন।

প্রতিবেদন বলছে, বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে চীনের মালিকানাধীন একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তারা চীনের পতাকাও পুড়িয়ে দিয়েছেন। তবে গার্মেন্টস কারখানাটিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতিরও বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহত লোকজনের মধ্যে শিশুরাও আছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে।

মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সেনা কর্তৃপক্ষকে সমর্থন করছে চীন। এ কারণে চীনের ওপর মিয়ানমারের আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ। গত মাসে ইয়াঙ্গুনে চীনা বিনিয়োগ রয়েছে, এমন ৩২টি কারখানায় আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় বইছে। মিয়ানমারের জান্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ নানাভাবে চাপ বাড়িয়ে চলছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ০৭ এপ্রিল

Back to top button