সিলেট

পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের রুপ পাচ্ছে সিলেটের আরেকটি শুল্ক স্টেশন

সিলেট, ১৪ ফেব্রুয়ারি – তামাবিলের পর সিলেটের আরেকটি শুল্ক স্টেশন পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হচ্ছে। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

শেওলা শুল্ক স্টেশনকে ২০১৫ সালের ৩০ জুন স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে এতোদিন ঘোষণার মধ্যেই আটকে স্থলবন্দর। শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো, লোকবল নিয়েই চলছিলো শেওলার কার্যক্রম। সেবাও ছিলো শুল্ক স্টেশনের। অবশেষে শেওলাকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শেওলা স্থলবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

শেওলার আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিলে স্থল বন্দরের কার্যক্রম চালু হয়। তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে ২০০১ সালে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় ১৬ বছর পর ২০১৭ সালে তামাবিলে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শেওলা দিয়ে ভারতের সাত রাজ্যের সাথে যোগাযোগ অপেক্ষাকৃত সহজতর হওয়ায় এখানে স্থল বন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে আমদানী-রফতানি আরও বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন : ঢাকা-সিলেট চার লেন : আপত্তিতে ব্যয় কমল ৪৭২ কোটি টাকা

তবে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রায় অচল অবস্থায় রয়েছে শেওলা শুল্ক স্টেশন। কয়লা ও পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। সামান্য ফল আমদানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তারা।

স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ১২৪ কোটি টাকা ব্যায়ে শেওলা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ রুপ দেয়া হচ্ছে। নৌ পরিবহণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১ এর আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

জানা যায় বলেন, প্রায় ২৫ একর জায়গার উপর শেওলা স্থলবন্দর নির্মান করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় পূর্বের ১৫ একরের বাইরে নতুন করে ৯ একর জমি অধিগ্রহণসহ গোডাউন, ইয়ার্ড, নিরাপত্তা প্রাচীর, ওয়েব্রিজ স্কেল, ট্রাক পার্কিং, ডমেস্টিক ব্যারাক নির্মাণ করা হবে। আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে এই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, শনিবার সকালে স্থলবন্দরের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে পুরো দেশের চেহারা পাল্টে যাবে।

তিনি বলেন, অতীতের সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়ন ভাবনা এবং প্রকল্পে লুটপাটের কারণে আমরা ক্রমশ: পিছিয়ে যাচ্ছিলাম। এখন প্রতিটি প্রকল্প স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হওয়ায় উন্নয়ন কার্যক্রম ত্বরাণি¦ত হচ্ছে। দেশের মানুষের চাওয়া আমরা পূরণ করতে পেরেছি। মানুষ কি চায়, তা জানার জন্য আমরা ঘরে-ঘরে যাচ্ছি। গ্রামীণ উন্নয়নে প্রতিনিয়ত নতুন প্রকল্প গ্রহণ করছি।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কে এম তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত এ সভায় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমেরিকা যখন ব্যর্থ হয়েছে, তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কীভাবে প্রভাব ফেলেছে আপনারা দেখেছেন। এ ব্যর্থতার কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। ইউরোপের দেশে দেশে তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের জনগণ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়নি। বাংলাদেশের জনগণ যেন আগেভাগে করোনার ভ্যাকসিন পায় সেজন্য এক হাজার কোটি টাকা আগাম বরাদ্দ দিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলা উপজেলায় করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় সফলতার পরিচয় দিয়েছে।

শনিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত কাস্টমস কমিশনার রাশেদুল হাসান, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী মাহবুব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) সুদীপ্ত রায় ও বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আতাউর রহমান খান প্রমুখ।

সূত্র : সিলেটটুডে
এন এইচ, ১৪ ফেব্রুয়ারি

Back to top button