অপরাধ

মোবাইলে প্রেম-বিয়ে, পাঁচ বছর কারাগারে একান্তে তুষারকে সঙ্গ দেন সুইটি

ঢাকা, ২৮ জানুয়ারি – কারাগারে বন্দি থাকা হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদের সঙ্গে দীর্ঘসময় এক নারীর সময় কাটানোর একটি সিসিটিভি ফুটেজ সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে এবারই প্রথম নয়, ওই নারী গত ৫ বছর ধরে তুষারকে একান্তে সঙ্গ দিয়ে আসছিলেন।

জানা গেছে, তুষারকে সঙ্গ দেওয়া ওই নারীর নাম আসমা শেখ সুইটি। রাজধানীর সবুজবাগের নিজ বাসায় মা ও ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়ায়। তার বাবা গ্রামের বাড়িতে থাকেন। সুইটি পেশায় একজন ব্যবসায়ী, যদিও আগে বেসরকারি একটি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে অনলাইন ব্যবসা করেছেন। হাতিরঝিল সংলগ্ন পুলিশ প্লাজা কনকর্ড শপিং সেন্টারের ৪র্থ তলায় রয়েছে তার একটি ফ্যাশন হাউস। বিউটি বাজ নামের এই ফ্যাশন হাউসটি ২০১৯ সালে চালু করেন তিনি।

কারাবন্দি তুষারের সঙ্গে মোবাইলে তার পরিচয়। পরবর্তীতে মোবাইলেই বিয়ে করেন তারা। সূত্র জানিয়েছে, আর্থিক সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে কারাগারের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে কারাগারেই তারা একান্তে বহুবার মিলিত হওয়ার সুযোগ পেতেন। তুষারের সঙ্গে আগে নিয়মিত কাশিমপুর কারাগারে সাক্ষাতে যেতেন সুইটি। করোনার কারণে সম্প্রতি তুলনামূলক কম যেতেন।

আরও পড়ুন : গবেষণায় জালিয়াতির অভিযোগে সামিয়া রহমানসহ ঢাবির তিন শিক্ষকের পদাবনতি

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কারা কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটির কাছে সুইটিকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন তুষার। তুষারের দাবি, বিয়ের আগে সুইটির সঙ্গে কারাগার থেকে মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলতেন তিনি। ফোনেই সুইটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তুষারের। পরবর্তীতে মুঠোফোনে তাদের বিয়ে হয়। তাদের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হতে একাধিক কারাবন্দির সাক্ষাৎকার নিয়েছে তদন্ত কমিটি।

এদিকে কারাবন্দি তুষারের প্রথম পক্ষে স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। ২০১২ সালে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর তুষার আহমেদ কারাগারে থাকায় তার প্রথম স্ত্রী নাজনিন সুলতানা মিষ্টি দুই সন্তানকে নিয়ে মালয়েশিয়ায় চলে যান। প্রথম স্ত্রী এবং তার পরিবারের সদস্যরা তুষারের সঙ্গে সুইটির বিয়ের বিষয়টি জানেন না বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে হলমার্ক কেলেঙ্কারির সাজাপ্রাপ্ত বন্দি তুষারের সঙ্গে এক নারীর দীর্ঘ সময় কাটানোর সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ পায়।

ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত ৬ জানুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-১ এ আটক হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতা তানভীরের ভায়রা কোম্পানির জিএম তুষারের সঙ্গে এক নারী সাক্ষাৎ করেন। ডেপুটি জেলার সাকলাইন সাক্ষাতের অনুমতির জন্য ১২টা ২২ মিনিটে সুপারের রুমে প্রবেশ করেন। সুপারের রুম থেকে অনুমতি নিয়ে ১২টা ৪০ মিনিটে বের হন সাকলাইন। ১২টা ৫৬ মিনিটে ওই নারী কারাগারে প্রবেশ করেন।

আরও পড়ুন : কোনো আদালতে জামিন চাইতে পারবেন না ডাক কর্মকর্তা সরওয়ার

সিসিটিভিতে দেখা যায়, ডেপুটি জেলার সাকলাইন ১২টা ৫৭ মিনিটে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করে ১টা ০৪ মিনিটে তুষারকে নিয়ে ওই নারীর সাথে সাক্ষাৎ করতে একটি কক্ষে নেন। ১টা ১৫ মিনিটে জেল সুপার কারাগার থেকে বের হয়ে যান। এরপর তুষার একটি কক্ষে প্রায় ৪৬ মিনিট একান্তে সময় কাটায় ওই নারীর সঙ্গে।

এ ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে কারাগারে নারীর সময় কাটানোর ঘটনায় সিনিয়র জেল সুপার ও জেলারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে ডেপুটি জেলারসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারি কারণে হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও তার ভায়রা প্রতিষ্ঠানের জিএম তুষার ২০১২ সাল থেকে কারাগারে রয়েছেন।

সূত্র: নতউন সময়
এন এ/ ২৮ জানুয়ারি

Back to top button