সিলেট

যতো সম্পদ সিলেট আ.লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের

রফিকুল ইসলাম কামাল

ঢাকা, ১২ জানুয়ারি- দীর্ঘদিন পর সিলেটে কড়া নাড়ছে নির্বাচন। দেশজুড়ে পৌরসভা নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে সিলেটের জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা শিক্ষার দিক দিয়ে পিছিয়ে আছেন। তবে সম্পদের দিক দিয়ে কেউ কারো চেয়ে কম নন।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এই প্রথম সিলেটে কোনো নির্বাচনের ডামাঢোল বাজছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচনের জন্য দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

জানা গেছে, জকিগঞ্জে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. খলিল উদ্দিনকে। এ পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী হিসেবে টিকেট পেয়েছেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র ইকবাল আহমদ তাপাদার।

আরও পড়ুন :  সিলেটে ‘ডাকাত সর্দার’ হারুন গ্রেপ্তার

অন্যদিকে, গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহেল আহমদকে মেয়র প্রার্থী করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন।

এ চার মেয়র প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে নিজেদের স্থাবর-অস্থাবর যাবতীয় সম্পদের বিবরণ দিয়ে হলফনামা দাখিল করেছেন।

হলফনামায় দেখা গেছে, জকিগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. খলিল উদ্দিন এইচএসসি পাস। তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই, অতীতেও ছিল না। পেশায় ব্যবসায়ী খলিল উদ্দিন প্রতি বছর ব্যবসা থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন। মেয়র পদ থেকে প্রতি বছর তার আয় ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

খলিল উদ্দিন উল্লেখ করেছেন, তাঁর কাছে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকে ৬০ হাজার টাকা আছে। ১ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার, ৫০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে তাঁর। খলিল উদ্দিনের কাছে ব্যবসার পুঁজি আছে ২ লাখ টাকা। তাঁর নামে ৪২ শতক অকৃষি জমি আছে। কোনো দায়দেনা বা ঋণ নেই তাঁর।

জকিগঞ্জে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইকবাল আহমদ তাপাদার স্বশিক্ষিত। তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলা না থাকলেও ২০১২ সালে একটি মামলা ছিল। তবে সে মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পান। তিনি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক, যেখান থেকে তাঁর আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ইকবাল আহমদ তাপাদারের কাছে নগদ ২০ হাজার টাকা ও ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা আছে। তাঁর স্ত্রীর ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার আছে, যেগুলোর মূল্য ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।

ইকবাল আহমদ তাপাদারের ২০ হাজার টাকার আসবাবপত্র আছে, কোনো কৃষি-অকৃষি জমি নেই। তাঁর ব্যবসার পুঁজি আছে ১২ লাখ ৯২ হাজার ১১০ টাকা। পূবালী ব্যাংক দরগাহ গেইট শাখা থেকে তিনি ৩০ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৫ টাকা ঋণ নিয়েছেন।

এদিকে, গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রুহেল আহমদ বিএ পাস। তার নামে এখন কোনো মামলা নেই। তবে ১৯৯৪ সালে একটি ফৌজদারি মামলা হয়, যেটি থেকে তিনি অব্যাহতি পান।

পেশায় ব্যবসায়ী রুহেল আহমদের এ খাত থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ টাকা। তাঁর কাছে নগদ ২৮ হাজার টাকা, দেড় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ২ লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। তাঁর স্ত্রীর ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার আছে। ৪ শতক কৃষি জমি ও ৪ শতক অকৃষি জমি আছে তাঁর।

রুহেল আহমদের কোনো দায়দেনা বা ঋণ নেই। তাঁর ব্যবসার পুঁজি আছে সাড়ে ১২ লাখ টাকা।

এ পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন স্বশিক্ষিত। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে দায়েরকৃত একটি মামলা বিচারাধীন। তিনি ব্যবসা থেকে প্রতি বছর ৪ লাখ ২ হাজার ২০৪ টাকা এবং চাকুরি থেকে ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা আয় করেন। দোকানভাড়া বাবদ তিনি ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৬০ টাকা পান প্রতি বছর।

গোলাম কিবরিয়ার কাছে নগদ ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৮৬১ টাকা আছে। তাঁর কাছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র আছে। তাঁর নিজ নামে ৫০০ শতক কৃষি জমি আছে। এছাড়া যৌথ মালিকায় ১৩০০ শতক কৃষি জমির মধ্যে তাঁর ভাগ দুই আনা ৬৫০ শতক এবং ২৫০ শতক অকৃষি জমির মধ্যে তাঁর ভাগ ১২৫ শতক। তাঁর কোনো দায়দেনা নেই।

সূত্র: সিলেটভিউ২৪

আর/০৮:১৪/১২ জানুয়ারি

Back to top button