পশ্চিমবঙ্গ

ভবানীপুরে দিদি আগেই জানতেন তিনি হারবেন: রুদ্রনীল

কলকাতা, ০৭ এপ্রিল – টলিউড অভিনেতা ও বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসনে বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেছেন। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, ‘ভবানীপুরে দিদি আগেই জানতেন তিনি হারবেন! তাই ভয়েই পালিয়ে গিয়েছিলেন। তৃণমূলকে লক্ষ্য করে রুদ্রনীলের সাফ কথা, ‘খেলা নয়, বিকাশ হবে, আসল উন্নয়ন হবে বিজেপির হাত ধরেই।’

রুদ্রনীলের রাজনীতির হাতে খড়ি বাম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পরে তৃণমূল হয়ে অবশেষে গেরুয়া শিবিরে। এই দল বদল নিয়ে তিনি বলেন, ‘বামপন্থীরা বামপন্থার কথা বলেন। কিন্তু রাজনীতি করতে এসে সেই বামপন্থার কথা ভুলে গিয়েছেন তারা। যে কারণে আমরাও দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা পাল্টাইনি। সব মানুষের উপকার হবে, এটা ভেবেই গিয়েছিলাম। তৃণমূলের ওপর আস্থা তৈরি হয়েছিল। তারপর ২-৩ বছর পর দেখা গেলো তৃণমূল উল্টো জিনিস করা শুরু করেছে। সবাই আশাহত হয়ে গেলেন। দুর্নীতি হচ্ছে, কিন্তু সরকার কোনও শাস্তি দিচ্ছে না।’

আরও পড়ুন : দিদি গুজরাতিতে চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন, ভালো লেগেছিল-মোদী

বাংলার উন্নয়নে তৃণমূলের দাবি নিয়ে রুদ্রনীলের প্রশ্ন, ‘কে বলেছে পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়ন হয়নি? এখানে কীসের উন্নয়ন হয়েছে জানেন? দুর্নীতির উন্নয়ন, কাটমানির উন্নয়ন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলেই ভবানীপুর এলাকার উন্নতি করতে পারতেন। কিন্তু, সেটা একেবারেই হয়নি।’

নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী বিদুৎমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দীর্ঘদিনের হেভিওয়েট নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আর তা নিয়ে বলতে গিয়ে রুদ্রনীল বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে এমন একজনকে দাঁড় করিয়েছেন যিনি কোনও কথা বললেও দল তার কথা শোনে না। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় নিপাট ভাল মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী তাকে রাসবিহারি থেকে তুলে এনে ভবানীপুরে দাঁড় করিয়ে বিষপান করালেন। ভবানীপুর আসলে বদল চায়। তাই ভয়ে তৃণমূল নেত্রী পালিয়েছেন।’

রুদ্রনীলের দাবি, ‘বাংলার মিনি ইন্ডিয়া ভবানীপুর এবার বদল চায়। আর এই বদলের ইঙ্গিতের আশঙ্কাতেই তৃণমূল নেত্রী নিজের কেন্দ্র থেকে বিদায় নিয়েছেন। এবার সেই চর্চিত ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে আমায় প্রার্থী করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আমি কোনও নেতা নই। দলের সামান্য কর্মী মাত্রা। দল আমায় যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করার চেষ্টা করব। মানুষের পাশে থেকে মানুষের কাজ করার চেষ্টা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবানীপুরে জলের সমস্যা রয়েছে। ড্রেনেজ সিস্টেমও ভালো নয়। বৃষ্টি হলেই বহু জায়গায় জল জমে যায়। ভবানীপুরের যে সব ব্যবসায়ীরা রয়েছেন, তোলাবাজির দাপটে তারা রীতিমতো বিরক্ত। চাকরি চাইতে গেলে মার খেতে হয়। আর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি তো রয়েছেই। সমস্যার কোনও শেষ নেই। যদি আমি জিতি, তবে সবার আগে ভবানীপুরের মানুষের সমস্যাগুলোর সমাধান করার চেষ্টা করব।’

ভবানীপুরে হার নিশ্চিত জেনে তৃণমূল সন্ত্রাস করছে অভিযোগ করে রুদ্রনীল বলেন, ‘আলিপুরের গোপালনগরের কাছে ২০ থেকে ২৫ জন দুষ্কৃতী এসে বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছে। নারী কর্মীদের হয়রানিও করা হয়। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। কয়েকদিন আগে আবার ভবানীপুরের ল্যান্সডাউন মার্কেটের কাছেও প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছিল। তৃণমূলের গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে মানুষ একজোট হতে চাইছেন। যেদিন থেকে তিনি প্রচারে বের হচ্ছেন মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে এসে স্বাগত জানাচ্ছেন। এটাই ঘাসফুল শিবিরের মানুষজন সহ্য করতে পারছেন না। সেই কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের সাহায্য পাচ্ছি না। সাহায্য পেলে প্রচার ছেড়ে থানায় ছুটে যেত হতো না বার বার।’

এন এইচ, ০৭ এপ্রিল

Back to top button