পশ্চিমবঙ্গ

বিরিয়ানিতে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভোট বাক্স লুটের আশঙ্কা মমতার

দীপক দেবনাথ

কলকাতা, ২৩ মার্চ – পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই বিজেপি, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোর দিকে তীব্র নিশানা করে চলেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের জন্য রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তেমনি ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিং’ (ইভিএম) কারচুপির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন মমতা।

মঙ্গলবার পুরুলিয়া জেলার অন্তর্গত পাড়া, কাশীপুর ও রঘুনাথপুরের জনসভা থেকে জনগণের ভোট রক্ষা করার জন্য দলের নির্বাচনী এজেন্টদের সতর্ক করে দেন মমতা। তিনি বলেন ‘…মায়েরা যেখানে ভোট দেবেন সেই ইভিএমে ৩০টা ভোট ক্যালকুলেট করেই মেশিন চালু করবেন না। তার পরেও দুবার করে অন-অফ করতে হবে। যদি প্রিসাইডিং অফিসার না শোনে, তবে লড়াই করে যাবেন। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবেন। ভিভিপ্যাট মেশিন কাজ করছে কি না, সেটাও দেখে নেবেন। ইভিএম যদি খারাপ হয়ে যায়, তবে মা-বোনেরা চলে যাবেন না, অপেক্ষা করবেন। কারণ, একটা ভোটই আপনাদের জীবনে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আনবে। আপনার একটা ভোটের দাম অনেক বেশি। না হলে আপনার নাম কেটে দিয়ে আপনাদেরই বাড়ি থেকে বের করে দেবে।’

স্ট্রংরুমের নিরাপত্তা নিয়েও দলীয় এজেন্টদের সতর্ক করে মমতা বলেন ‘ভোট হয়ে গেলে ভোটের মেশিন পাহারা দিতে হবে। যদি দিল্লি­র পুলিশ এসে বলে আপনারা সরে যান, আমরা দেখে নিচ্ছি। কিন্তু আপনাদের অধিকার ছাড়বেন না। কেন্দ্রীয় বাহিনীও থাকবে, আপনারা থাকবেন। নিজের মেশিন নিজেদেরই রক্ষা করতে হবে। ওই মেশিন রক্ষা করার সময়ে কেউ যদি বিরিযয়ানি দেয়, খাবেন না। কারণ, ওতে বিষ মিশিয়ে দেবে কিংবা মাদক বা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেবে। এক কাপ চা দিলেও তা খাবেন না। কারণ, আপনি খেলেন আর ঘুমিয়ে পড়বেন আর বিজেপি ভোট মেশিনগুলো নিয়ে পালিয়ে যাবে। আপনারা এই ভুলটা করবেন না। দরকার হলে বাড়ি থেকে রুটি-তরকারি নিয়ে আসবেন বা ডাল-ভাত খাবেন। কিন্তু বিজেপির হাতের খাবার খাবেন না।’

আরও পড়ুন : কাঁথিতে নরেন্দ্র মোদীর সভায় থাকতে পারেন, জানালেন দিব্যেন্দু অধিকারী

তার প্রশ্ন রাজ্যের সরকারের সমস্ত প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন হবে না কেন? উত্তর প্রদেশ ও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো থেকে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে কেন? ভোট দখল করার জন্য?’

বিজেপিকে বিশ্বাসঘাতক, মীরজাফরের দল বলে কটাক্ষ করে মমতা বলেন ‘ওদের বিশ্বাস করবেন না। ওরা বিশ্বাসঘাতক। ওরা মীরজাফরের দল, রাবণের দল, গদ্দারের দল, দস্যুর দল, দুঃশাসনের দল। ওরা গরিব মানুষের দল নয়।’

মমতার অভিযোগ ‘ওরা আমাকে অনেক মেরেছে। চোখে, মাথায়, বুকে আঘাত করেছে। বাকি ছিল পা। সেটাও জখম করেছে। আমাকে ভয় পাচ্ছিল, ভাবছিল নির্বাচনে মমতা বেরোলে বিজেপি গো হারা হারবে। তাই ওর পা-টা জখম করে দিই। কিন্তু আমি মরতে ভয় পাই না। আমি ভাঙি, তবু মচকাই না।’

মমতা এদিন সাফ জানিয়ে দেন ‘বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না। খেলা হবে। আমার একটা পা-ই যথেষ্ট। একটা পা দিয়ে বলে এমন মারব, যে মাঠের বাইরে বের করে দেব। দিল্লি থেকে হাওয়া হয়ে যাবে। আর কোনোদিন ভোট চাইতে আসবে না।’

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
এন এ/ ২৩ মার্চ

Back to top button