পশ্চিমবঙ্গ

“সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে তৃণমূলকে ভোট দিন” রায়দিঘির সভা থেকে মমতা

কলকাতা, ০৩ এপ্রিল – সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হলে, মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি যাতে না হয় সেই দিকে নজর রাখতে হলে তৃণমূল সরকারকে রাজ্যে ক্ষমতায় আনতে হবে। রায়দিঘির জনসভা থেকে এই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বার্তায় দিলেন শনিবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন তাঁর সভা থেকে বলেন, “মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করা বিজেপি-র কাজ। বাংলায় আমরা দুর্গাপূজা, কালী পূজা, লক্ষ্মী পূজা করি। এখানে সংখ্যালঘুরা তাদের উৎসব পালন করেন। আমাদের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। আমরা সবাই একসঙ্গে থাকি। দুর্গাপুজোয় মুসলমানরা যায়, ইফতারে হিন্দুরা যায়।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের সভা থেকে সি এ এ নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বলেছিলো সি এ এ করবে। করে দেখুক। আমি থাকতে রাজ্যে এসব হবে না। ওরা চাইছে এসব করে সম্প্রীতি নষ্ট করতে। এই কারণেই তৃণমূল সরকার রাজ্যে আনা প্রয়োজন।”

প্রসঙ্গত রাহুল সিনহা শনিবারই প্রচারে বেরিয়ে বলেছেন, “রাজ্যে ক্ষমতায় এসে প্রথম দুয়েক দিনের মধ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু করবে বিজেপি সরকার।” অন্যদিকে মতুয়া পরিবারের তৃণমূল নেত্রী মমতাবলা ঠাকুর বলেছেন, “এর আগে অমিত শাহ এসে বলেছিলেন করোনা-র পর সি এ এ চালু হবে। এসব মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। এসব বিশ্বাস করবেন না।”

আরও পড়ুন : মানুষের ক্ষোভে দেবশ্রীকে প্রার্থী করিনি : মমতা, দেবশ্রী বললেন, ‘আমিই চাইনি’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির যে অভিযোগ, রাজ্যে দুর্গাপূজা করতে দেওয়া হয় না। সরস্বতী পূজা স্কুলে হতে পারে না। তৃণমূল নেত্রী নিজে বার বার বিজেপি-র এই অভিযোগ খারিজ করেছেন। রাজ্যের মানুষ জানেন বিজেপি-র এই অভিযোগ সত্যি নয়। এদিন রায়দিঘি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একইভাবে বিজেপির এই মন্তব্য খারিজ করে পাল্টা বিজেপিকে সাম্প্রদায়িকতার প্রতীক বলে উল্লেখ করলেন। রাজ্যে দুর্গাপূজায় রাজ্য সরকারের তরফে পুজো কমিটিগুলিকে টাকা দেওয়া হয়। ঈদ, বড়দিন সব অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা থাকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন দুর্গাপূজা উদ্বোধনে যান, তেমনই ঈদের নামাজে যান, বড়দিনের সময় সেন্ট পলস ক্যাথিড্র্যাল চার্চে যান। এটাই ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিচয়।

এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সভা থেকে বার্তা দিয়ে বলেছেন, “আমি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। আমি হিন্দু ব্রাহ্মণের মেয়ে হয়ে ঈদের অনুষ্ঠানে যাই । আমার বাড়িতে বারুই পরিবারের চারজন মেয়ে বড় হয়েছে। একজন যে আমার সঙ্গে থাকে সেও নিম্ন বর্ণের।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের “বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য”-র যে ছবিটা রয়েছে সেটাকেই বার বার তুলে ধরেন তাঁর কাজে । এদিনের রায়দিঘির সভা থেকেও তিনি এই একই বার্তা দিয়েছেন। কেননা বিজেপি-র আনা এই রাজ্যে পুজো হতে না দেওয়ার অভিযোগ যে সঠিক নয় সেটা রাজ্যের দূর্গা পুজোর সংখ্যা (রাজ্যে ৫০ হাজার বেসরকারি সূত্রে আর ৩৫ হাজার সরকারি সূত্রে দূর্গা পুজোর সংখ্যা) দেখলেই বোঝা যায়।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের রাজ্যে দূর্গা পুজোয় মুসলমানরা আসে ইফতারে হিন্দুরা যায়। পাড়ায় পাড়ায় এক সঙ্গে আড্ডা দেয় হিন্দু ও মুসলমান”। এদিন সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ না করার জন্য অনুরোধ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্র : কলকাতা২৪x৭
এন এ/ ০৩ এপ্রিল

Back to top button