জাতীয়

অটোরিকশা বন্ধের দাবি শামীম ওসমানের, ‘বাংলার টেসলা’ বললেন প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ০৮ ফেব্রুয়ারি – ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে খুবই বিপদজনক হিসেবে উল্লেখ করে জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, এই অটোরিকশাগুলো চার্জ করে তার ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ চুরি করে। তারা আমাদের ৭/৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করছে।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রশ্নোত্তরে তিনি ব্যাটারিচালিত এসব অটোরিকশা বন্ধের দাবি জানান।

জবাবে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে ‘বাংলার ট্রেসলার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিদ্যুৎচালিত যানবাহন সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে বলেন, কত দ্রুত ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমকে ইলেকট্রিকে নিয়ে যাওয়া যায়- তার জন্য সারা বিশ্বে এখন একটা রেভুলেশন চলছে। তেল চালিত গাড়ির ইঞ্জিনের দক্ষতার মাত্রা হলো ২০ শতাংশ। অপরদিকে ইলেকট্রিক যন্ত্রের দক্ষতার মাত্রা হলো ৮০ শতাংশ। মূলত আমরা উৎসাহিত করি বাজারে যত দ্রুত পারে ইলেকট্রিক গাড়ি আসুক।

তিনি জানান, তেলচালিত বাহনে কোনো দূরত্ব যেতে যদি ১০০ টাকা লাগে, বিদ্যুৎচালিত যানে সেই দূরত্ব যেতে লাগবে ২০ টাকা। বাংলাদেশে ৪০ লাখের ওপর যানবাহন আছে। যারা লেড ব্যাটারি ব্যবহার করে। এগুলো চার্জ করতে ৭/৮ ঘণ্টা সময় লাগে। এগুলো যদি লিথিয়াম ব্যাটারি হয়, তাহলে লাগবে মাত্র আধা ঘণ্টা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ আমরা ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জির স্টেশন বসানোর নীতিমালা করেছি। এ নীতিমালা করে যে কেউ চাইলে চার্জ স্টেশন করতে পারবেন।

নসরুল হামিদ বলেন, এই ৪০ লাখ থ্রি হুইলারকে আমি বলি বাংলা ট্রেসলার। নিজ হাতে তৈরি করছেন। আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে কাজ করছেন। আমরা তাদের কোনো বাধা দিচ্ছি না। যান্ত্রিকভাবে এতে ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু বিদ্যুৎ যেটা ব্যবহার করছে তার রিটার্ন কিন্তু অনেক বেশি। এই ৪০ লাখ রিকশাচালক যারা বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, তারা অবশ্যই আয় করছেন।

তিনি বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশে যতো পাবলিক পরিবহন (বাস) আছে। সেগুলি দ্রুততার সাথে বিদ্যুতে নিয়ে আসা উচিত। খরচ কম পরিবেশ বান্ধব। বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টর ১৮ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করে। তবে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগের। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত। কোথাও অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় কি না বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো সেগুলোর বিষয়ে নজরে রাখছে।

এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ক্যাপটিভ ও অফগ্রিড নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট। আর গ্রিডভিত্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ২৬ হাজার ৫০৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ১১ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট (৪৩ শতাংশ), ফার্নেস অয়েলভিত্তিক ছয় হাজার ৪৯২ মেগাওয়াট (২৪ শতাংশ), ডিজেলভিত্তিক ৮২৬ মেগাওয়াট (৩ শতাংশ), কয়লাভিত্তিক চার হাজার ৪৯১ মেগাওয়াট (১৭ শতাংশ), হাইড্রো ২৩০ মেগাওয়াট (এক শতাংশ), অনগ্রিড সৌর বিদ্যুৎ ৪৫৯ মেগাওয়াট (দুই শতাংশ), বিদ্যুৎ আমদানি দুই ২ হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট (১০ শতাংশ)।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাপ্যতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার বিপরীতে ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় এ বছর শীতকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াটে নেমে আসে। আসন্ন গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদার পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।

সূত্র: কালবেলা
আইএ/ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Back to top button