পর্যটন

মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে যা জানা থাকা ভালো

ডিহাইড্রেশন এবং সানবার্ণ
বিষুবরেখার একেবারে কাছাকাছি ২০ থেকে ৭০ উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে দেশটির অবস্থান। সারাবছর ধরে প্রখর সূর্যকিরণ দেশটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ঘামের কারণে পানিশূন্যতা, লবণের ঘাটতি এবং সানবার্ণের ঝুঁকিতে থাকেন অনভ্যস্ত ভ্রমণকারীরা। প্রচুর পানি পান করতে হবে, লবণের ঘাটতি পূরণের জন্য স্যালাইন জাতীয় পানীয় পান করতে হবে। এ অবস্থায় অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় আরও ক্ষতিকর। আর সর্বোপরি উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় উপযোগী পোশাক সাথে নিতে হবে।

মাদক
মালয়েশিয়ায় মাদকসংক্রান্ত আইন অত্যন্ত কঠোর। মাদক পরিবহন, উৎপাদন, আমদানী, রপ্তানী এসব ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত। ১৫ গ্রামের বেশি হেরোইন, ৩০ গ্রামের বেশি মরফিন বা কোকেন, ৫০০ গ্রামের বেশি গাঁজা, ২০০ গ্রামের বেশি গাঁজা নির্যাস, ১ কেজি ২০০ গ্রামের বেশি আফিম কারো অধিকারে থাকলে তা দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট।

এছা্ড়া মাদকের অবৈধ ব্যবহারে সর্বোচ্চ দশ বছরের কারাভোগ করতে হতে পারে, উচ্চ অংকের জরিমানা হতে পারে কিংবা উভয় শাস্তি হতে পারে। কারো কাছে মাদক না পাওয়া গেলেও যদি মাদক ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায় তবে শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ অবস্থায় মাদক মালয়েশিয়ার বাইরে ব্যবহৃত হয়েছে এটা প্রমাণ করেও লাভ হবে না।

কেনাকাটা
মালয়েশিয়ায় কেনা প্রতিটি পণ্যে ৩০% শুল্ক দিতে হয়।

ট্যাক্সি
সম্প্রতি ট্যাক্সি ক্যাবের ভাড়া পুননির্ধারণ করা হয়েছে মালয়েশিয়ায় এবং মিটার ছাড়া চুক্তিতে ট্যাক্সি চালানো নিষিদ্ধ। কিন্তু সেখান অসাধু ট্যাক্সি ড্রাইভারের সংখ্যা একেবারে কম নয়। মালয়েশিয়ায় নতুন, এটা বুঝতে পারলে অনেক ট্যাক্সি ড্রাইভার ঘুরপথে গন্তব্যে যায় বেশি বিল তোলার জন্য। আবার সেখানে অবৈধ রেজিস্ট্রেশনবিহীন ট্যাক্সি রয়েছে যা ছদ্মবেশী ছিনতাইকারীরা চালায়।

ধর্মীয় স্থাপনা পরিদর্শন
মালয়েশিয়ার ধর্মীয় স্থাপনা যেমন মসজিদ বা মন্দিরে প্রবেশের সময় জুতা খোলারা রেওয়াজ আছে। কিছু মসজিদে প্রবেশের সময় নারীদের আলখেল্লা জাতীয় পোশাক এবং স্কার্ফ দেয়া হয়। এসব জায়গায় ছবি তোলায় বিধিনিষেধ নেই, তবে ছবি তোলার আগে অনুমতি নেয়া ভালো।

হাত মেলানো
মালয়েশিয়ায় নারী-পুরুষ উভয়ের মাঝেই হাত মেলানোর রীতি আছে। তবে মুসলিম নারীদের মাঝে এক্ষেত্রে অনীহা থাকতে পারে। কাজেই হাত মেলানোর ক্ষেত্রে নারীদের দিকে থেকে হাত বাড়ানোর জন্য অপেক্ষা করা উচিত। সামাজিকভাবে সালাম আদানপ্রদান হাত মেলানোর মতই বিবেচিত হয়।

মালয়েশীয় বাড়িতে বেড়ানো
কারো বাড়ি যাওয়ার আগে ফোন করা ভদ্রতা বলে বিবেচিত হয়। অবশ্যই জুতা খুলে প্রবেশ করতে হবে। সাধারণত পানীয় পরিবেশন করা হয়, যা গ্রহণ করাটা ভদ্রতা বলে বিবেচিত হয়।

আরও পড়ুন: জল-জঙ্গলের সুন্দরবনে…

মশা
সারাবছর ধরে আর্দ্র আবহাওয়া থাকার কারণে মশার উৎপাতও আছে দেশটিতে। মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, জাপানী বি এনকেফালাইটিস ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি এড়াতে শরীরে এবং পোশাকে মশা নিবারক ব্যবহার করা উচিত। মালয়েশীয় উপদ্বীপে ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি খুব কম। কুয়ালালামপুর এবং অন্যান্য বড় শহরগুলিতেও ঝুঁকি খুব কম। কিন্তু পূর্ব মালয়েশিয়া ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হয় ভ্রমণকারীদের।

খাবার
খাদ্যের মান বিবেচনায় বলতে হয় পুরো মালয়েশিয়াতেই খাবারের মান বেশ ভালো। তবু খাবার ও পানীয় কেনার সময় মানের দিকটিতে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। বোতলজাত পানি ও কার্বনেটেড পানীয় পান করার চেষ্টা করতে হবে। ট্যাপ, ঝরনার পানি বা কিউব বরফ এড়িয়ে চলতে হবে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং ফিল্টার সাথে রাখা যেতে পারে। এছাড়া ডায়রিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও এন্টিবায়োটিক সাথে রাখা ভালো।

অন্যান্য
বিক্ষোভ সমাবেশ মালয়েশিয়ায় খুব একটা হয় না, কিন্তু সাম্প্রতিককালে কিছু বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে এবং পুলিশ শক্ত হাতে তা দমন করেছে। কাজেই যারা বাইরে থেকে মালয়েশিয়া ভ্রমণে যাবেন, তাদের উচিত হবে যে কোন মূল্যে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে দূরে থাকা।

এন এইচ, ২৯ অক্টোবর

Back to top button