মামুনুলকে নিয়ে পোস্ট: আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২৫
কুষ্টিয়া, ১২ এপ্রিল – রিসোর্টকাণ্ডে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে দেওয়া ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর এবং লুটপাট চালানো হয়েছে ১০টি বাড়িতে। সোমবার (১২ এপ্রিল) সকালের দিকে সদর উপজেলার জিয়ারখি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক ও সাবেক সভাপতি আহসান সরদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই মাঝে আজিজুল হকের সমর্থক জিয়ারখি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শরীফুল ইসলাম হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। প্রতিপক্ষ আহসান সরদারের কয়েকজন ওই পোস্টে মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে কমেন্ট করেন। তারা শরীফুল ইসলামকে নরেন্দ্র মোদির সন্তান বলে কটূক্তি করেন।
এ ঘটনার জের ধরে সকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দুই পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন : কুষ্টিয়ায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত
এদের মধ্যে সাইদুল (৪০) নামে একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহত আরো চার জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক বলেন, ‘আহসান সরদারের লোকজন হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে আমার লোকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।’
অন্যদিকে, আহসান সরদারের দাবি, ‘হেফাজত আখ্যা দিয়ে’ আজিজুল হকের লোকজন তার লোকদের বাড়িঘরে হামলা করে। এতে তার পক্ষের ১০ থেকে ১৪ আহত হয়েছেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিয়ারখীর বাসিন্দা আরাশেদ আলী জানান, ভোর ৬টার দিকে দুইপক্ষের বাড়িতে হামলায় মাধ্যমে সংঘর্ষের সূচনা হয়। সকাল ৭টার দিকে তারা দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহতদের মধ্যে ১৮ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মামুনুর রহমানের দাবি, এই সংঘর্ষ হেফাজত নেতা মামুনুলকে নিয়ে নয়। তিনি বলেন, ‘জিয়ারখী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক ও সাবেক সভাপতি আহসান সরদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তাদের একটি মারামারির মামলা নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে সালিস হয়। এ ঘটনার জের ধরেই সংঘর্ষ হয়েছে।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত কবীর জানান, এ ঘটনায় পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে। দুই পক্ষই আলাদা করে মামলা করতে চেয়েছে।
সূত্র : পূর্বপশ্চিমবিডি
এন এইচ, ১২ এপ্রিল