এশিয়া

আগাম ভোট দিলেন অং সান সু চি

নেপিডো, ২৯ অক্টোবর- আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে আগাম ভোট দিয়েছেন দেশটির নেত্রী অং সান সু চি। ভোটার হিসেবে তার নিবন্ধন ইয়াঙ্গুনে। তবে করোনাভাইরাস জনিত বিধিনিষেধের কারণে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বৃহস্পতিবার রাজধানী নেপিদোতে ভোট দেন তিনি। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিরোধীরা ভোট গ্রহণ স্থগিতের আহ্বান জানালেও আগামী ৮ নভেম্বরের নির্বাচনের বিষয়ে অনড় রয়েছেন ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক লিগ (এনএলডি) নেতা সু চি।

আসলে কথিত গণতান্ত্রিক উত্তরণের নামে মিয়ানমারে আদতে জারি রয়েছে সেনাশাসন। ২০০৮ সালে প্রণীত সংবিধান অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনের যে কোনও প্রস্তাব পার্লামেন্টে পাস হতে হলে ৭৫ শতাংশের বেশি সমর্থন প্রয়োজন। অথচ দেশটির পার্লামেন্টের এক-চতুর্থাংশ আসন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদের ১১টি আসনের মধ্যে ছয়টি আসনেও রয়েছেন সেনাবাহিনী মনোনীত ব্যক্তিরা। গণতান্ত্রিক সরকার বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে তাদের। সংবিধানে নাগরিকত্ব বিবেচনায় সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার অধিকারও ক্ষুণ্ন করে রাখা হয়েছে। সু চির দলের এই শাসনামলে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। বরং সু চির সঙ্গে সেনাবাহিনীর নৈকট্য বেড়েছে।

প্রায় অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে এই প্রথম কোনও নির্বাচিত সরকারের অধীনে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সরাসরি সেনা শাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ক্ষেত্রেও এই নির্বাচন একটি পরীক্ষা বলে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এজন্য বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে দেশটিকে। করোনাভাইরাসের মহামারিতে এপর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষের। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে করোনা দুর্গত দেশ মিয়ানমার। সংক্রমণ মোকাবিলায় আরোপ করা লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছে দেশটির লাখ লাখ মানুষ।

আরও পড়ুন: পদত্যাগ করছেন না থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

গণতান্ত্রিক আন্দোলনের লড়াই চালিয়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করা অং সান সু চি ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিপুল জয় নিয়ে ক্ষমতায় আসেন। এবারের নির্বাচনে আবারও জয়ের আশা করছে এনএলডি। তবে এবারে জয়ের ব্যবধান গত বারের তুলনায় খানিক কম হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মুখে মাস্ক আর হাতে সুরক্ষামূলক গ্লোভস পরে প্রশাসনিক রাজধানীর একটি ভোট কেন্দ্রে ভোট দেন এনএলডি নেতা সু চি। তার আগে একই স্থানে ভোট দেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিয়ান্ট।

সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমারের করা আচরণের কারণে সু চির আন্তর্জাতিক সম্মানে টান পড়েছে। তবে নিজ দেশে এখনও জনপ্রিয় তিনি। রোহিঙ্গা জনসংগোষ্ঠীর ওপর সেনা নিপীড়নের অভিযোগ উঠলেও নিজ দেশে তার আঁচড় লাগেনি সু চির গায়ে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাজ্য রাখাইনে নির্বাচন বাতিল করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ পার্লামেন্টারি আসন সু চি বিরোধীদের দখলে। তবে সম্প্রতি অঞ্চলটিতে রাখাইন সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় নিয়োজিত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তৎপরতায় সহিংসতার ঘটনা বাড়ায় সেখানে নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
এন এইচ, ২৯ অক্টোবর

Back to top button