জানা-অজানা

খাটো মানুষে ভরে যেতে পারে পৃথিবী

বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার পরিণতি হিসেবে খাটো আর বামন মানুষে ভরে যেতে পারে আগামী দিনের পৃথিবী। প্রাগৈতিহাসিক যুগের ঘোড়ার ফসিলের ওপর গবেষণা চালিয়ে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্তন্যপায়ী প্রাণীদেহের উচ্চতা কমে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন আমেরিকার একদল ফসিল বিজ্ঞানী।

প্রায় ছয় কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ঘোড়ার উদ্ভব এবং তার বিবর্তনের ইতিহাস জানার লক্ষ্যে ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা এবং নেব্রাস্কার বিজ্ঞানীরা এ গবেষণা পরিচালনা করেন।

ফ্লোরিডা মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরির কিউরেটর ড. জোনাথন ব্লক জানান, ‘তাপমাত্রা বেড়ে গেলে প্রাণীর উচ্চতা কমে আসে। আবার তাপমাত্রা নেমে গেলে বাড়তে শুরু করে তার উচ্চতা। এক সময় পৃথিবীর তাপমাত্রা এতই নেমে গিয়েছিল যে, ছোট হতে হতে একটি বিড়ালের আকারে নেমে আসে ঘোড়ার উচ্চতা।

ড. ব্লক আরও জানান, প্রাথমিক যুগ পার হওয়ার পরবর্তী এক লাখ ৭৫ হাজার বছরে নাটকীয়ভাবে কমে যায় ঘোড়ার উচ্চতা। পরবর্তী সময়ে আবারও তাদের উচ্চতা বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। গোটা প্রক্রিয়াটি সরাসরি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।

আরও পড়ুন:  পৃথিবীর বুকে রহস্যময় একটি গ্রাম

উল্লেখ্য, ঘোড়া প্রজাতির প্রাচীনতম সদস্যের নাম সিফারুহিপ্পাস। আমেরিকান বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ওয়াইওমিং বিগহর্ন এলাকা থেকে ১২ পাউন্ড ওজন বিশিষ্ট এক লাখ ৩০ হাজার বছর আগের সিফরুহিপ্পাস ঘোড়ার ফসিল উদ্ধার করা হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এর ওজন এক পর্যায়ে নেমে আসে মাত্র সাড়ে আট পাউন্ডে। যদিও পরবর্তী ৪৫ হাজার বছরে বিবর্তনের মাধ্যমে আবারও এর ওজন বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ পাউন্ড।

এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের ফিলিপ গিংগারিচ। তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আমাদের উচ্চতা গিয়ে দাঁড়াবে মাত্র তিন ফুট। আর এটিই যদি হয়ে থাকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি চরম পরিণতি, তবে তা-ই হোক। তেমন পরিস্থিতি দেখা দিলে আমরা তার সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারি কিংবা চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারি।

Back to top button