ক্রিকেট

আর্থিক দুরাবস্থায় ক্রিকেটাররা, ঘরোয়া ক্রিকেট চালুর দাবি

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল – ‘এনসিএল শুরুর পরই আবার দেশে করোনা পরিস্থিতি খারাপ অবস্থা ধারণ করে। তখন আসলে বিসিবিরও কিছু করার ছিল না। তবে আমরা বায়ো-বাবলে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারলে ভালো হতো’ – কামরুল ইসলাম রাব্বি, পেস বোলার

কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশের অধিকাংশ মানুষের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আর্থিক দিক ভেবে। বাংলাদেশের বেতনের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররাও বর্তমানে সেই চিন্তায় আছেন। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিভাগ, তৃতীয় বিভাগের ক্রিকেটাররা, কারণ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের কোনো টুর্নামেন্ট হয় না।

গত মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল জাতীয় ক্রিকেট লিগ। শুধু দুই রাউন্ড খেলার পরই আবার অনির্দিষ্টকালের জন্য তা স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া আর কোনো নিয়মিত ঘরোয়া টুর্নামেন্টই গত এক বছরে মাঠে গড়ায়নি। ফলে এখন আর্থিক সংকটে পড়েছেন ক্রিকেটাররা। সবার প্রতিনিধি হয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। তিনি বলেন, ‘এনসিএল শুরুর পরই আবার দেশে করোনা পরিস্থিতি খারাপ অবস্থা ধারণ করে। তখন আসলে বিসিবিরও কিছু করার ছিল না। তবে আমরা বায়ো-বাবলের মধ্য থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারলে ভালো হতো। ‘লকডাউন’ উঠিয়ে দিলে সঙ্গে সঙ্গে আবার খেলা শুরু করা উচিত। কারণ খেলোয়াড়দের আর্থিক অবস্থা আসলেই ভালো না। আমরা যতটুকু খোঁজ নিয়েছি, অবস্থা খুবই খারাপ। এর চেয়ে খারাপ আর হতে পারে না। মাঝে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের জন্য কিছু খেলোয়াড় টিকে আছে, কিন্তু বেশির ভাগই ভালো অবস্থায় নেয়।’

আরও পড়ুন : মুম্বইয়ের কাছে কলকাতার হারের ধারা অব্যাহত

সাধারণত প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ কিংবা সমমানের ক্রিকেটারদের কোনো নির্দিষ্ট বেতন নেই। নিয়মিত টুর্নামেন্টগুলো থেকে বছরে তাদের আয় ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা। কিন্তু সব মিলিয়ে খরচও অনেক বেশি। যারা গ্রাম থেকে এসে ঢাকায় থাকেন তাদের জীবনও অনেক কষ্টসাধ্য। বাড়তি টুর্নামেন্ট তো দূরের কথা গত এক বছরে তারা নিয়মিত টুর্নামেন্টগুলোই খেলতে পারেননি। ফলে জমানো টাকাও শেষ হয়ে এখন সবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা।

রাব্বি বলেন, ‘প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগসহ যারা প্রথম শ্রেণি, বিপিএল, ডিপিএল খেলে না, এরা বেশির ভাগ খেলোয়াড় এখন বিপদে আছেন। যারা এগুলো খেলে তাদেরও মাসে খরচ এক থেকে দেড় লাখ টাকা, বসে বসে এক বছর পার করলে প্রায় ১৬-১৭ লাখ টাকা চলে যায়। প্রত্যেকটি খেলোয়াড়ের জন্যই এটি বিশাল ধাক্কা। আমরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা যেই বেতন পাচ্ছি, সেটা দিয়ে মোটামুটি চলা যায়।

‘যারা বেতনে নেই, তাদের অবস্থা আরো খারাপ। আমরা ৯০ জন আর জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা বেতন পাচ্ছি। তা ছাড়া সব খেলোয়াড়ই বেতনের বাইরে। যারা বেতনের বাইরে তাদের অবস্থা খুবই খারাপ।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ক্রিকেটার অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার মতো টাকারও ব্যবস্থা করতে পারছেন না বলে এই পেসার জানান, ‘লকডাউনের এ সময় অনুশীলন করাও কষ্টকর। যেহেতু খেলা কবে শুরু হবে তার নিশ্চয়তা নেই, তাই সবাই দ্বিধায় আছে কী করবে। কারণ অনুশীলনের যে খরচ আছে সেটাও এখন পুষিয়ে নেওয়া কষ্টকর। মাঠে আসা-যাওয়া, গাড়ির তেল কেনা, রিকশার খরচ এগুলোও এখন অনেকের কাছে কঠিন অবস্থায়। আমার বরিশালের অনেক খেলোয়াড় ফোন দিয়ে বলেছে কবে খেলা শুরু হবে।’

সবার পক্ষ থেকে রাব্বি বিসিবির কাছে অনুরোধ করেছেন যত দ্রুত সম্ভব ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলো শুরু করার জন্য, ‘বিসিবির কাছে এইটুকুই বলতে চাই যে যখনই করোনার পরিস্থিতি একটু ভালো হবে খুবই জলদি যেন খেলা ফেরানো হয়।’

সূত্র :প্রতিদিনের সংবাদ
এন এইচ, ১৪ এপ্রিল

Back to top button