জাতীয়

আ’লীগ সরকারকে অবশ্যই চলে যেতে হবে: মির্জা ফখরুল

ঢাকা, ৩০ মার্চ – বর্তমান সরকারকে অবশ্যই চলে যেতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই সরকার স্বাধীনতা দিবসের দিনে বাংলাদেশের মাটিতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরিয়েছে। গত তিন দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা এবং চট্টগ্রামে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরিয়েছে, যে প্রাণ গেছে তার জন্য সম্পূর্ণভাবে সরকার দায়ী। এই সরকারকে অবশ্যই জনগণের কাছে এর জবাব দিতে হবে এবং রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে।’

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবসের দিনে মানুষ হত্যা, পুলিশি হামলা ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব বলেন। ঢাকা ছাড়াও এই কর্মসূচি সকল মহানগরীতে একযোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মঙ্গলবার একই দাবিতে হবে সকল জেলা সদরেও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, এভাবে কখনো একটা দেশ চলতে পারে না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে আজকে জনগণের আশা-আকাঙ্খা পদদলিত করে, চূরমার করে বাংলাদেশে কখনো কোনো সরকার টিকে থাকতে পারবে না, তাদেরকে অবশ্যই চলে যেতে হবে। অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। অন্যাথায় অতীতে যেভাবে স্বৈরাচার সরকারের যেভাবে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও সেভাবে বিদায় নিতে হবে। আসুন আজকে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, আসুন আমরা ঐক্য গড়ে তুলি, জনগণের ঐক্য গড়ে তুলি।

আরও পড়ুন : মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে ৪ পৌরসভার প্রচার

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজকে পরিকল্পিতভাবে পার্লামেন্টকে একটা রাবার স্ট্যাম্প পার্লামেন্ট বানানো হয়েছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে, প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আজকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের পেটুয়া বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে। এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে, এই সরকারকে অবশ্যই চলে যেতে হবে।

গত কয়েকদিনের সরকারের দমনপীড়নের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই সরকারের পেটুয়া বাহিনী, ছাত্র লীগ-আওয়ামী লীগসহ তারা নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার করছে, অনেককে গ্রেপ্তার করেছে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীসহ যুব দল-স্বেচ্ছাসেবক দল-ছাত্র দলের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে দাম ‘আকাশচুম্বি’ হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।

ভারতের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের সাথে ভারতের খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আমরাও চাই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিভিন্নভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠুক। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানি চুক্তি হয়নি, এখন পর্যন্ত সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি। পৃথিবী কোনো সভ্য দেশে এইভাবে সীমান্ত হত্যা হয় কি-না আমার জানা নেই।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার একটা নতজানু সরকার, তারা কোনোভাবেই ভারতের কাছ থেকে আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় করতে দিতে পারছে না। এই সরকারকে রেখে আমাদের জনগণের আশা-আকাঙ্খা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারবো না। আজকে আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হয়ে পড়েছে, আমাদের গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়েছে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলছে, ঢাকা শহরে, সারাদেশে যা হচ্ছে তাতে নাকি বিএনপি নাকি উন্ধন দিচ্ছে। আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, বিএনপির নিজের আন্দোলনে বিশ্বাসী, কাউকে প্ররোচনায় করায় বিশ্বাসী না। বরং আওয়ামী লীগ প্ররোচনা দিচ্ছে এবং বিএনপিকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে।’

মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে কাজী আবুল বাশার ও আবদুল আলীম নকির পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, নাজিম উদ্দিন আলম, ইশরাক হোসেন, মহানগর বিএনপির হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিমসহ মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বিএনপির আমিনুল হক, রফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শামীমুর রহমান, মীর নেওয়াজ আলী, আমিরুজ্জামান শিমুল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, মোরতাজুল করীম বাদরু, মামুন হাসান, নবী উল্লাহ নবী, তানভীন আহমেদ রবিন প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ৩০ মার্চ

Back to top button