জাতীয়

সাগর-রুনি হত্যা মামলা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং: র‍্যাব

ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি – সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলাটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে মন্তব্য করেছে র‌্যাব। সবকিছু পর্যালোচনা করে সঠিক নিয়মে এবং যথাযথ সময়ে র‌্যাবের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় র‍্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ এ মামলায় পেশাদারিত্ব ও কর্মদক্ষতার প্রমাণ হিসেবেই র‌্যাব তাদের দায়িত্ব পালন করছে। তদন্ত কর্মকর্তা অত্যন্ত বিজ্ঞ এবং চৌকস। সবকিছু পর্যালোচনা করে, সঠিক নিয়মে ও যথাযথ সময়ে র‌্যাব এ মামলার প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবে।’

র‌্যাবের এই মুখপাত্র বলেন, ‘সাংবাদিক সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের হাতে হত্যার শিকার হন। এ ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় রুনির ছোট ভাই একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করছে র‌্যাব। এখনও পর্যন্ত ১৬০ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলায় মোট আট জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে দুই জন জামিনে মুক্ত আছেন এবং ছয় জন জেল হাজতে আছেন। এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা।’

আরও পড়ুন : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মালদ্বীপকে সহায়তা করবে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী

আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘মামলায় গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে— নিহত দম্পতি দুজনই সাংবাদিক ছিলেন। মামলাটির ভয়াবহতা এবং স্পর্শকাতর হওয়ায় র‌্যাব অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।’

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘কৌশলগত কারণে বার বার আদালত থেকে সময় নেওয়া হয়েছে। মামলায় যে ধরনের ফরেনসিক পাওয়া গিয়েছিল, তদন্ত কর্মকর্তা ডিএন পরীক্ষার জন্য তা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলেন। ডিএন পরীক্ষার সেই রিপোর্টও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এসে পৌঁছেছে। পরবর্তীতে এই মামলার অন্যতম আরেকজন ব্যক্তি তানভীর রহমান মিসকেস দায়ের করেন। সেটি বর্তমানে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।’

আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘হত্যার বেশ কিছুদিন পর র‌্যাব মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায়। এরপর থেকে আমরা তদন্ত পরিচালনা করছি। তদন্তাধীন মামলা হওয়ায় এ বিষয়ে বেশি কিছু বলা সমীচীন হবে না। তবে র‌্যাব সকলকে আশ্বস্ত করতে চায়, মামলাটি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্তমানে চলমান রয়েছে।’

কত জনের ডিএন রিপোর্ট এসেছে জানতে চাইলে লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘সর্বমোট ২৫ জনের ডিএন পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এসে পৌঁছেছে। ২৫ জনের ডিএনএ’র পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে রক্ত, রক্তমাখা জামা-কাপড়সহ সবধরনের আলামত আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। সর্বাধুনিকভাবে একটি প্রযুক্তি আছে, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে অভিযুক্ত আসামির একটি অবয়ব তৈরি করা যায়। এ বিষয়টি নিয়েও তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজ করছেন।’

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র‍্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই থেকে মামলাটি র‌্যাব তদন্ত করছে।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
এন এইচ, ১১ ফেব্রুয়ারি

Back to top button