নাটোর

ধান কুড়িয়ে জমানো টাকা দিয়েও জুটলো মাথা গোঁজার ঠাঁই

নাটোর, ০৩ ফেব্রুয়ারি – একটি অভিযোগ হাতে নিয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসেছেন নাটোরের সিংড়ার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের গুনাইখাড়া ভাটোপাড়া গ্রামের মৃত গাফফার আলীর স্ত্রী ফুলবিবি। অভিযোগ, এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মেহের আলীর বিরুদ্ধে।

মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দ দেয়া গৃহের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির কথা বলে ফুলবিবির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মেহের আলী। এখন ঘর না পেয়ে সেই টাকা ফেরৎ চাইলে মেম্বার টাকা দিতে তালবাহানা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফুলবিবি গুনাইখাড়া ভাটোপাড়া গ্রামের এক অসহায় নারী। পরের বাড়িতে কোনোরকমে কাজ করে দিন পার করেন। মাঠে রসুন লাগান। ধান কুড়িয়ে সংসার চলে কোনোমতে। এসব থেকে কিছু নিজে খান, কিছু জমান।

ফুলবিবি অভিযোগ করে বলেন, ভূমিহীনদের ঘর পাওয়ার জন্য আমি মেম্বারকে ১১ মাস আগে ১০ হাজার টাকা দিই। ঘর না পেয়ে টাকা ফেরৎ চাইলে নানা তালবাহানা শুরু করেন মেম্বার।

আরও পড়ুন : নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে ডিএসসিসির ১৮টি ওয়ার্ড

আরেক ভুক্তভোগী সাফা বেগম বলেন, ‘ধার করে আমি ১০ হাজার টাকা দিছি ১১ মাস আগে, এখনও ঘর পাইনি। সরকার সবাক ঘর দিছে। ঘরের জন্য মেম্বারকে বললে সে বলে, পরে দেয়া হবে। আমি আর ফুলবিবি বু (বোন অর্থে) একসাথেই সব কাজ করি। আমারা দুই জনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিলো। ঘরও দিলো না, টেকাও ফেরত দিচ্ছে না।’

এ বিষয়ে মেহের আলী মেম্বার বলেন, তারা আমার ওয়ার্ডের না। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে প্রতিপক্ষ তাদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছে।

৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনার কথা আমার জানা নেই। তবে কেউ ঘর দেয়ার কথা বলে অর্থ নিলে তা ঠিক না।

এ বিষয়ে হাতিয়ন্দহ ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আলম মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং ইউনিয়ন পরিষদে চা খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেন।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিরুল ইসলাম বলেন, একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সত্যতা জানার জন্য সিংড়া সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। মেম্বার টাকার নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে প্রশ্ন উঠছে সচেতন মহলে, তবে কি হাতিয়ন্দহ ইউনিয়নে যারা পেলেন ঘর, তারা কি সবাই টাকা দিয়েই পেলেন?

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এন এ/ ০৩ ফেব্রুয়ারি

Back to top button