বগুড়া

জিএম সিরাজের বক্তব্যে বিব্রত বগুড়া বিএনপি

বগুড়া, ৩০ মে – বগুড়ার এক জনসভায় খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে বক্তব্য দেওয়ায় সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের ওপর ভীষণ চটেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তার এই অপ্রত্যাশিত বক্তব্যে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে দলটি।

যদিও নেতারা বলছেন, এটি তার ব্যক্তিগত বক্তব্য। কিন্তু মাঠের নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক সুবিধা নিতেই তিনি ড. খন্দকার মোশাররফকে আগাম রাষ্ট্রপতি বানিয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বলছেন, সুবিধাবাদী সিরাজ সুযোগ পেলেই খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে চান। এর আগেও তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার পক্ষে মত দিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন।

জানা গেছে, গত ২৬ মে বিকেলে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবিতে বগুড়ার সেন্টাল হাইস্কুল মাঠে জেলা বিএনপির আয়োজনে জনসভা হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সেই জনসভায় বক্তব্য দেন বগুড়া সদর আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডের বক্তব্যের একপর্যায়ে সিরাজ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার দোয়ায় তারেক রহমান সুস্থ হয়ে ওঠুন এবং মায়ের দোয়ায় ছেলে হবে পরবর্তীতে এই দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং একই সঙ্গে আজকে আমি ঘোষণা করতে চাই আমাদের নেতা তারেক রহমান যেদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেদিন রাষ্ট্রপতি কে হবেন জানেন- আজকের যে চিফ গেস্ট ড. মোশাররফ হোসেন প্রেসিডেন্ট। ইনশাল্লাহ।’ তার এই বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আর এতেই বিপত্তি বেঁধেছে।

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ছাড়াই তিনি এককভাবে রাষ্ট্রপতির নাম ঘোষণা করায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভীষণ চটেছেন তার ওপর। কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যে ঘরে-বাইরে এমনকি দলের অভ্যন্তরেও তার সমালোচনা হচ্ছে। সাধারণ নেতাকর্মীরা তার এই বক্তব্য মেনে নিতে পারছেন না। সবাই দুষছেন তাকে।

অনেকের মতে, দলের মধ্যে আলোচনায় থাকতেই তিনি পরিকল্পিতভাবে এমন বক্তব্য দিয়েছেন। কারণ এখন তিনি দলের কোনো পদে নেই। এমনকি সংসদ সদস্যও নেই। যার কারণে আলোচনায় থাকার জন্য তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন।

৩২ বছর ধরে তৃণমূলে বিএনপি করা কর্মী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি কে হবেন তা বলার দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়ার। জিএম সিরাজ তা বলতে গেলেন কেন। অবশ্যই তার কোনো দুরভিসন্ধি আছে। এর আগেও তিনি দলের প্রধান খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। এবার তিনি খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি পদ দিয়ে দিলেন।’

বগুড়া সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহমেদ খান রুবেল বলেন, ‘সিরাজ সাহেবের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে আমরা বিব্রত। এটি তার নিজস্ব বক্তব্য। এই বক্তব্যের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। দল এর দায়-দায়িত্ব নেবে না। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দেখবেন।’

বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, জিএম সিরাজ নিজ দায়িত্ব থেকে এমন কথা বলেছেন। এমন সিদ্ধান্তের কথা শুধু দলীয় প্রধানরাই বলতে পারেন। তিনি অতি উৎসাহী হয়ে এটা বলেছেন মনে হয়।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের দুটি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে।

সূত্র: কালবেলা
এম ইউ/৩০ মে ২০২৩

Back to top button