সুনামগঞ্জ

মেয়েকে ধর্ষণ ও বাবাকে মারপিটের ঘটনার প্রধান আসামি শামীম গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জ, ০৯ অক্টোবর- সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বখাটের যন্ত্রণায় বাড়ি থেকে পালিয়ে থাকা তরুণীর বাবাকে মারপিটের ঘটনায় প্রধান আসামি শামীম আহমদকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেলতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকাল ৪ টায় সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়াতুন নবী (মিডিয়া কর্মকর্তা) জানান, গত তিনদিন ধরেই অবস্থান পরিবর্তন করে শামীম আহমেদ অবশেষে শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেলতলায় যান। পরে সেখানথেকে তাকে আটক করা হয়।

তিনি জানান, শামীমকে জগন্নাথপুর থানায় নিয়ে আসা হবে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এর আগে ওই তরুণীকে না পেয়ে গত সোমবার রাত ১টায় বাড়িতে ঢুকে তার বাবাকে (৬৫) বেধড়ক পেটায় শামীম ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় জড়িত ৪ বখাটেকে রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলো- লিটন মিয়া, আকাই মিয়া, আলম মিয়া ও দিলাক মিয়া।

পরে মঙ্গলবার সকালে তরুণীর বাবাকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ আত্মীয়ের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের অভয়নগর গ্রাম থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।

আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল, দেড় মাসের শিশুকে ফিরে পেলেন মা

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সাত বছর আগে জগন্নাথপুর উপজেলার ওই তরুণীর সঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলার রাজারবাগ গ্রামের এক যুবকের বিয়ে হয়। দুই বছর আগে তাদের মধ্যে দাম্পত্য বিরোধ দেখা দিলে একমাত্র পুত্রসন্তানকে নিয়ে তরুণীটি বাবার বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে গ্রামের শামীমের কুনজর পড়েন তিনি। শামীম প্রায়ই তাকে উত্যক্ত করত ও কুপ্রস্তাব দিত। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তরুণীর বাবা আলীগঞ্জ বাজারে একটি ঘর ভাড়া করে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। সেখান থেকে শামীম এক মাস আগে ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন তার বাবা।

এদিকে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শামীম ভয় দেখিয়ে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও মারধর করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন তরুণীটি।

তার বাবা আরও জানান, সোমবার রাত ১টার দিকে শামীম কয়েকজন সহযোগী নিয়ে আলীগঞ্জে গিয়ে তার মেয়েকে খোঁজ করে। এ সময় মেয়েকে না পেয়ে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটায়।

তিনি আরও জানান, শামীমের অত্যাচারে মেয়েকে নিয়ে তিনি বিপদে পড়েছেন। শামীম নেশাগ্রস্ত ও বেপরোয়া হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে নালিশ দিয়েও তিনি বিচার পাননি।

স্থানীয় পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান বলেন, ‘আলীগঞ্জ বাজার থেকে একদিন ওই তরুণীকে শামীম জোর করে ওঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। স্থানীয় লোকজন এ সময় বাধা দেন। শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ওই সময় আনোয়ার মিয়া ও তার মেয়েকে বলে এসেছি, এরপরে কখনো এমন হলে আমাকে জানাতে। পরে শামীমকে ডেকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে এই অন্যায় কেন করছে। আমার কাছে শামীম দাবি করে যে, সে মেয়েটিকে বিয়ে করেছে। কিন্তু আমি তাকে কাবিন দেখাতে বললে সেটা আর দেখায়নি।

জগন্নাথপুর থানার সাবইন্সপেক্টর শিবলী মজুমদার জানান, শামীমের অত্যাচারে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন ওই তরুণী। রাতে তার বাবাকে চিকিৎসার করানোর সময় মোবাইল নম্বর দিয়ে আসা হয়। তরুণীটি ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে পুলিশ তার বাবাকে নিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ০৯ অক্টোবর

Back to top button