গবেষণা

‘ড্রাগন ম্যান’ – বদলে দিল মানব বিবর্তনের ইতিহাস, খোঁজ মিলল সবচেয়ে কাছের পূর্বপুরুষ

চীনে পাওয়া এক লাখ ৪০ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগের মানুষের মাথার খুলির সঙ্গে আধুনিক মানুষের খুব কাছাকাছি মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, উত্তর-পূর্ব চীনে পাওয়া এসব খুলির অধিকারী মানুষদের সঙ্গে নিয়ান্ডারথাল মানুষের চেয়ে আমাদের আধুনিক মানুষের মিলই বেশি।

ফলে মানব বিবর্তন নিয়ে যে ধারণা, তা অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে। শুক্রবার গবেষকরা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরার

প্রায় অবিকৃত অবস্থায় যে খুলিটি পাওয়া গেছে, সেটি একজন মধ্যবয়সী মানুষের। কোটরে ঢোকানো চোখ, মোটা ভ্রূ। প্রশস্ত মুখমণ্ডল আর সরু চিবুক। চেহারার এ বৈশিষ্ট্যগুলো ওই খুলির অধিকারীকে মানবপরিবার বৃক্ষের অন্যান্য অস্তিত্বশীল সদসদের চেয়ে আধুনিক মানুষের নিকটাত্মীয়ের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

চীনে এর আগে যেসব মানবফসিল পাওয়া গেছে, গবেষকরা সেগুলোর সঙ্গে এর একটা লিঙ্ক খুঁজে পেয়েছেন। এ প্রজাতির নমুনাকে তারা ‘হোমো লঙ্গি’ কিংবা ‘ড্রাগন মানুষ’ নামকরণ করেছেন।

‘হারবিন’ নামে এ খুলিটি আবিষ্কৃত হয় ১৯৩৩ সালে। হারবিন নামে একটি জায়গায় এটি পাওয়া গেছে বলে এর নামকরণও করা হয়েছে ওই নামে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি সেনাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গত ৮৫ বছর ধরে এটি লুকোনো অবস্থায় ছিল। ২০১৮ সালে খুলিটি উদ্ধার করে হেবেই জিইও ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জি কিয়াংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে যে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়, তার সহপ্রণেতা লন্ডন ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের ক্রিস স্ট্রিঞ্জার বলেন, আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, হারবিন খুলিটি নিয়ান্ডারথালদের চেয়ে আধুনিক মানুষের (হোমো সেপিয়েন্স) সঙ্গেই সম্পর্কের দিক দিয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ। এর মানে হল আধুনিক মানুষের মধ্যে নিয়ান্ডারথালের চেয়ে ড্রাগন মানুষের সম্পর্ক বেশি।

ক্রিস স্ট্রিঞ্জার হারবিন প্রজাতিকে হোমো সেপিয়েন্সের ‘সিস্টার স্পেসিস’ বলে মনে করেন।

গবেষণাটি দ্য ইনোভেশন নামে একটি সাময়িকীতে প্রকাশ পায়। এসব খুলির মানুষরা কমপক্ষে এক লাখ ৪৬ হাজার বছর আগে মধ্য প্লাইস্টোসিন যুগে পৃথিবীতে ছিল বলে ধারণা।

সূত্র: সমকাল
এম ইউ/২৬ জুন ২০২১

 

Back to top button