ইসলাম

রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত

আবু সুফিয়ান

মানবতার মুক্তির মহাসনদ, বিশ্বের সবথেকে বেশি পঠিত, সত্যের দিশারী, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল হয়েছে মহিমান্বিত এই রমজান মাসে। নফল ইবাদতের মধ্যে কুরআন তিলাওয়াত সর্বোত্তম।

নিঃসন্দেহে আরবি ভাষায় যারা কুরআন পড়তে পারেন তারা খুবই ভাগ্যবান। কেননা আল্লাহ তায়ালা বুঝার জন্য কুরআন আরবি ভাষায় সহজ করে নাযিল করেছেন। আর যারা অনুবাদ বুঝেন কিন্তু তিলাওয়াত পারেন না। তাদের নিয়মিত কুরআন শেখা উচিত।

পবিত্র কুরআনের সূরা আম্বিয়া’র ১০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তো তোমাদের জন্য কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমাদের জন্য উপদেশ রয়েছে। সুতরাং তোমরা কি তা বুঝবে না?

এবার স্পষ্ট প্রতীয়মান, অত্র আয়াতে আল্লাহ কুরআন বুঝা ও উপদেশ গ্রহণ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। কেননা পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, এটি হলো কল্যাণময় কিতাব। যা আমি তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানুষ এসব আয়াতসমূহ অনুধাবন করে আর বোধ শক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ উপদেশ গ্রহণ করে। [আল কুরআন, সূরা ছোয়াদ, আয়াত নং ২৯]

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের দু’টো দৃষ্টিভঙ্গি-ই প্রয়োগযোগ্য। বছরব্যাপী অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ তিলাওয়াত যেমনটা উমর (রা.) বছরে শুধু সূরা বাকারা তিলাওয়াত করেছেন এবং জীবনে প্রয়োগ করেছেন’।

আবার রমজানে ব্যাপকহারে শুধু তিলাওয়াত যা প্রতি রমজানে জিবরাঈল কর্তৃক নবীজি (সা.) পুরো কুরআন তিলাওয়াত করে শুনানোর শিক্ষা। নবী জীবনের শেষ বছর রমজানে জিবরাঈল দু’বার শুনিয়ে ছিলেন।

মুসনাদে আহমদ কিতাবের ৩৮নং পৃ্ষ্ঠার ৩৫নং হাদিসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি চায়, কুরআন যেভাবে নাযিল হয়েছে সেভাবেই তিলাওয়াত করবে, সে যেন ইবনে উম্মে আবদ অর্থাৎ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রা.) এর মত পাঠ করে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে সারা বিশ্বে নারীদের হিফজ বিভাগে অংশগ্রহণও চোখে পড়ার মত।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে তিনি কুরআন তিলাওয়াত করতেন? তাফসিরে তাবারী’র ৪০নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে তিনি বলেছেন, আমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি যখন ১০টি আয়াত তিলাওয়াত শিখত তখন সামনে আর অগ্রসর হতো না।, যতক্ষণ না সে দশটি আয়াতের অর্থ অনুধাবন করতো এবং সে মোতাবেক আমল করতো।

প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছেন, আমাদের যুগে কুরআন হিফজ করা কঠিন ছিল আর তা আমল করা সহজ ছিল। আমাদের পর এমন যুগ আসবে যখন কুরআন হিফজ করা সহজ হবে কিন্তু তার উপর আমল করা কঠিন হবে। [আল জামি লি আহকামিল কুরআন]

সুতরাং, আল কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব বিষয়ে আর লেখা দীর্ঘায়িত না করে নিশঙ্কচিত্তে, নিঃসন্দেহে এটাই আল্লাহর কাছে বলতে পারি যে, হে আল্লাহ, আমাদেরকে আল কুরআনের অর্থ অনুধাবন ও সে মোতাবেক দৈনন্দিন জীবনে চলার প্রতিটি পদক্ষেপে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

Back to top button