ফরিদপুর

‘বিবাহিত’ রিয়ান ফরিদপুর ছাত্রলীগের সভাপতি, ভগ্নিপতি ছাত্রদলের

ফরিদপুর, ২৪ জানুয়ারি- সম্প্রতি ঘোষিত ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের ২৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক অনুমোদিত কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে ‘বিবাহিত’ এক তরুণকে। এ ছাড়া ওই কমিটিতে দুই সহ-সভাপতিসহ তিনজন রয়েছেন ফরিদপুরের বহুল আলোচিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত। এ অভিযোগ করেছে জেলা ছাত্রলীগের একাংশ।

তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ানকে সভাপতি ও ফাইম আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্যে আংশিক কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

আরও পড়ুন :  আমার নাম নেওয়ার আগে অজু কইরা নিয়েন: এমপি নিক্সন চৌধুরী

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ ইমতিয়াজ ও প্রচার সম্পাদক সাজিদুল ইসলামসহ ১০ জন ছাত্রলীগের নেতা ও কর্মী একটি লিখিত অভিযোগে এ দাবি করেছেন। বিতর্কিত ঘোষিত নেতৃত্বের বিষয়ে অনাস্থা জানিয়ে একই অভিযোগ জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগ ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে।

অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জানুয়ারি ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত কমিটির সভাপতি পদে মনোনীত তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান একজন বিবাহিত ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, তার আপন ভগ্নিপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি। তার বাবা ফরিদপুর জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, তামজিদুলের পরিবারের কেউ অতীতে আওয়ামী লীগের কর্মী কিংবা সমর্থক ছিল না, বরং বিএনপির-জামায়াতের সমর্থক ছিল।

বাংলাদেশে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে ৫ এর (গ) ধারা উল্লেখ করে ওই অভিযোগ বলা হয়, গঠনতন্ত্রের ওই ধারা অনুযায়ী বিবাহিত ব্যক্তি ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাবে না।

অভিযোগে বলা হয়, এছাড়া কমিটিতে স্থান পাওয়া দুই জন সহসভাপতি ও একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদপুরের বহুল আলোচিত ঘটনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার মামলার আসামি। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় ঘোষিত বর্তমান কমিটির ওপর ফরিদপুরের ছাত্রলীগের কর্মীরা আস্থা সংকটে ভুগছে।

গত ১৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যর স্বাক্ষরিত ২৫ সদস্যে বিশিষ্ট ছাত্রলীগের এক বছর মেয়াদি এ কমিটির অনুমোদনে দেওয়া হয়। ওই কমিটিতে তামজিদুল রশিদ চৌধুরীকে সভাপতি এবং মো. ফাহিম আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এ ছাড়া ওই কমিটিতে আরও নয়জন সহ-সভাপতি, সাত জন সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সাতজন সাংগঠনিক সম্পাদক রয়েছেন।

সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী বলেন, তাকে বিবাহিত বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়।

‘আমার বাবা রিয়াদুল রশিদ চৌধুরী কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নয়’-দাবি করে তিনি বলেন, তবে আমার পরিবার আওয়ামী লীগপন্থি ।

ভগ্নিপতি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনানেন বিষয়ে তামজিদুল রশিদ চৌধুরী বলেন, আমার বোনের সঙ্গে যখন তার বিয়ে হয় তখন অনু জেলা ছাত্রদলের নেতৃত্বে ছিল না।

ঘোষিত এই আংশিক কমিটি সম্পর্কে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, ছাত্রলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনের প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগের কাছে প্রস্তাবনা ও মতামত চাওয়া হয়। কিন্তু এই কমিটির ক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটেছে।

‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আমাদের পাশ কাটিয়ে এই কমিটি ঘোষণা করেছে’-মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের মতামত চাওয়াটা তাদের উচিত ছিল। ঘোষিত কমিটিতে ‘ছাত্রলীগের সভাপতি বিবাহিত’ ছাত্রলীগের একাংশের এ অভিযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, অনুসন্ধানে যদি বিবাহিত প্রমাণ মেলে তাহলে গঠণতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।

তার বাড়িতে হামলার মামলার আসামিদের কমিটিতে স্থান দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের কমিটি রাখা হবে সংগঠনের জন্য কলঙ্কজনক। এ ধরনের অভিযুক্তদের নিয়ে কমিটি করা সমীচীন নয়।

অভিযোগ সম্পর্কে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, রিয়ানের বিবাহিত হওয়া সম্পর্কিত অভিযোগটি সত্য নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতির বাড়িতে হামলা মামলার তিনজন অভিযুক্ত নাম কমিটিতে রয়েছে তাদের নাম বিভিন্ন আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসেছে, এখনো কোন অকাট্য প্রমাণ মেলেনি। তারা দোষী প্রমাণিত হলে কমিটি থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে।

সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি

আর/০৮:১৪/২৪ জানুয়ারি

Back to top button