পশ্চিমবঙ্গ

‘জোটকে ভয় পেতে শুরু করেছেন মমতা’, সুদীপ্তের চিঠি নিয়ে কে কি বলছেন?

কলকাতা, ০৬ ডিসেম্বর – গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে সামনে এসেছিল নারদা-কাণ্ড। একের পর এক নেতার-মন্ত্রীর হাতে টাকা তুলে দেওয়ার ভিডিও ফাঁস হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে। এবার আরও একটা বিধানসভা নির্বাচন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে হলেও ক্রমশ সরগরম হচ্ছে বাংলার রাজনীতি। এবার বোমা ফাটালেন সারদা কেলেঙ্কারির নায়ক সুদীপ্ত সেন। একুশের আগে সুদীপ্ত বোমা ফাটালেন চিঠি লিখে।

কয়েকদিন আগেই সারদা চিটফান্ডকাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের হাতে এসেছিল একটি অডিও ক্লিপ। ওই অডিওক্লিপে একাধিক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর শুনতে পাওয়া যায়। এবার লিখলেন চিঠি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে অধীর চৌধুরী, বিমান বসু ও সুজন চক্রবর্তীর নাম।

প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা সেই চিঠিতে তিনি লিখছেন, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, অধীর চৌধুরী, বিমান বসু ও সুজন চক্রবর্তীকে তিনি প্রচুর টাকা দিয়েছেন।

কাকে কত টাকা দিয়েছেন তাও তিনি চিঠিতে সবিস্তারে উল্লেখ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এই চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এই চিঠি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি রাজনৈতিক কারবারিদের।

আরও পড়ুন : আমার দলেই কেউ কেউ আমার মৃত্যু কামনা করে: মমতা

চিঠি সুদীপ্ত সেন দাবি করেছেন যে অধীর চৌধুরী তাঁর কাছ থেকে নাকি ৬ কোটি টাকা নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর বলেছেন, ‘আমার দেখে ভাল লাগছে জোটকে ভয় পেতে শুরু করেছেন মমতা। তার জন্যই এই সব নাম এখন দিচ্ছেন। পুরোটাই হচ্ছে তৈরি করা। আমি তাঁকে চিনিও না। যদি সেরকম হয় মানহানির মামলা করব।’

শুধু তাই নয়, চিঠিতে সুজন চক্রবর্তীর নামও লিখেছেন সুদীপ্ত। তাঁর দাবি, ৯ কোটি টাকা নিয়েছেন নাকি এই বাম নেতা। যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সুজন। তিনি বলেছেন, ‘হাস্যকর। আমরাই তো দিনের পর দিন দাবি করেছিলাম যে সারদায় কারা যুক্ত তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে। ৯ বছর পর মনে হল যে আমরা রয়েছি। বিমানদার মত লোকও রয়েছেন? সবচেয়ে বড় কথা রাজ্যের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় উনি কী বললেন না বললেন তার কী গুরুত্ব আছে? প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। এমনই গোপনীয়তা যে মিডিয়াতেও বেরিয়ে গেল।’

চিঠিতে সুদীপ্ত সেন লিখেছেন মুকুল রায় প্রচুর টাকা নিয়েছেন। টাকার পরিমাণ কত তিনি মনে করতে পারছেন না। বিষয়টি গটআপ বলে দাবি করেছেন মুকুল রায়।

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলেছেন, ‘সুদীপ্ত সেন রাজ্য পুলিশের কাস্টডিতে আছেন। পুরোটাই সাজানো। ওর বক্তব্যের না রয়েছে বিশ্বাসযোগ্যতা, না গ্রহণযোগ্যতা।’ এমনকী, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও ২ কোটি টাকা নিয়েছেন বলে চিঠিতে দাবি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে হেসে বিমান বসু বলেন, ‘ও তাই নাকি? দেখা যাবে।’ তবে ভোটের আগে সারদা-কাণ্ডে মূল অভিযুক্তের এহেন দাবি ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে রাজনৈতিকমহলে।

তবে খুব শীঘ্রই হয়তো সারদা-কান্ডে সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করবে সিবিআই। সেই সময় চিঠি সহ একাধিক বিষয় উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সুত্র : সংবাদ প্রতিদিন
এন এ/ ০৬ ডিসেম্বর

Back to top button