ভারতে বেড়েছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, বিয়েতে বেড়েছে যৌতুক
নয়াদিল্লি, ৩১ মে – গত কয়েক দশকে ভারতে পুরুষদের মধ্যে শিক্ষা ও কাজের সুযোগ যেমন বেড়েছে, বিয়ের সময় যৌতুক নেওয়ার প্রবণতা তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
ওই গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বিবিসি এক প্রতিবেদনে লিখেছে, যৌতুক দেওয়া-নেওয়া দক্ষিণ এশিয়ার শতাব্দী পুরনো রেওয়াজ, যেখানে বিয়ের সময় কনের পরিবার নগদ অর্থ, ঘড়ি এবং স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন দামি উপহার দেয় বরের পরিবারকে।
১৯৬১ সালে এই প্রথা ভারতে বেআইনি ঘোষণা করা হলেও যৌতুক বা পণ নেওয়া হয়নি, বরং বেড়েছে। এই যৌতুক অসংখ্য নারীকে ঠেলে দিয়েছে পারিবারিক সহিংসতা, এমনকি মৃত্যুর দিকে।
সময়ের ব্যবধানে যৌতুকের বিবর্তন বোঝার জন্য ১৯৩০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে ভারতের ৭৪ হাজারেরও বেশি বিয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার জেফরি ওয়েভার এবং ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়ার গৌরব চিপলুঙ্কার।
বর ও তার পরিবারকে দেওয়া নগদ অর্থ ও উপহার এবং কনের পরিবারকে দেওয়া বরের পরিবারের উপহারের পার্থক্য হিসাব করে তারা ‘নিট যৌতুক’ বের করেছেন।
ভারতের গ্রামীণ অর্থনৈতিক ও জনসংখ্যাতাত্ত্বিক সমীক্ষার তথ্যের ওপর নির্ভর করে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল ১৭টি রাজ্যে একটি প্যানেল সমীক্ষা চালিয়েছেন এই গবেষকরা।
বিবিসি লিখেছে, ভারতের বেশিরভাগ বিয়ে এখনও পারিবারিকভাবে হয়। বয়স ২০ এর কোঠা শেষ হওয়ার আগেই বেশিরভাগ নারীর বিয়ে হয়ে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ৯০ শতাংশ বিয়েতেই যৌতুক লেনদেন হয়েছে। আর্থিক হিসাবে, ১৯৫০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে যৌতুকের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৫ হাজার কোটি ডলার।
গবেষণার বরাতে জেফরি ওয়েভার বিবিসিকে বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যত মজবুত হয়েছে, যৌতুক লেনদেনের চর্চাও বেড়েছে। বিশেষ করে এই প্রবণতা বেশি বেড়েছে ১৯৪০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত। এই সময় ধরে অনেক বেশি পুরুষ শিক্ষিত হয়েছে, ভালো মানের চাকরি পেয়েছে; ফলে যৌতুকও বেড়েছে।
সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
আইএ/ ৩১ মে ২০২৩