মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের লাশের জন্যও টাকা নিচ্ছে সেনাবাহিনী
নেপিডো, ১৩ এপ্রিল – মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত ব্যক্তিদের লাশ হস্তান্তরের জন্য পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে দেশটির সেনাবাহিনী। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দেশটির অধিকারকর্মীরা।
এদিকে, ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে একের পর মামলা দিয়েছে ক্ষমতা দখলকারী জান্তা। সবশেষ গতকাল সোমবার তার বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। খবর সিএনএন, রয়টার্স ও এএফপির
শুক্রবার ইয়াঙ্গুনের কাছের বাগো শহরে গণতন্ত্রপন্থিদের ওপর রক্তক্ষয়ী হামলা চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এতে অন্তত ৮২ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ, ধর্মঘট ও অসহযোগ আন্দোলন চলছে। দেশটির মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানায়, রোববার পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৭০৬ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন : মিয়ানমারে নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়াল
এ সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন তিন হাজারের বেশি মানুষ। এএপিপি জানায়, শুক্রবার বাগোতে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী অ্যাসল্ট রাইফেল, রকেটচালিত গ্রেনেড ও হাত গ্রেনেড ব্যবহার করে।
বাগো শহরের বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনএনকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর শুক্রবারের অভিযানের পর শহর থেকে অনেক অধিবাসী পালিয়ে আশপাশের গ্রামগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন। নিরাপত্তা বাহিনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় তৎপরতা ও তল্লাশি চালাচ্ছে। ওই দিন থেকে শহরে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তিনি শহরের প্রধান সড়কের কাছেই বাস করেন। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই আসে। তারা ঘাঁটি তৈরি করেছে। শুক্রবারের হত্যাযজ্ঞের পর মর্গে লাশের স্তূপ জমে ওঠে।
বাগো ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করে, শুক্রবার যারা নিহত হয়েছেন, তাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের জন্য পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে জান্তা। তারা লাশের জন্য এক লাখ ২০ হাজার মিয়ানমার কিয়াত আদায় করছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ৭ হাজার ২০০ টাকার সমান। রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনেও প্রায় একই কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল অং সান সু চির বিরুদ্ধে ফের ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী মিন মিন সোয়ে। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে সু চির বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি নেপিদোতে ও একটি ইয়াঙ্গুনে। সর্বশেষ অভিযোগ আনা হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনে।
সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ১৩ এপ্রিল