জাতীয়

দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দুদক দন্তহীন বাঘ হলে চলবে না

ঢাকা, ০৭ ফেব্রুয়ারি – রোববার হাইকোর্ট এক পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দন্তহীন বাঘের মতো আচরণ বা দন্তহীন বাঘ হলে চলবে না।

আদালত বলেছেন, জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় কমিশনকে (দুদক) দুর্নীতিগ্রস্তদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আদালত এটাও বলেছেন, সংশ্লিষ্ট আইনটি সংস্কার করা উচিৎ, যাতে করদাতারা দেশে ও বিদেশে তাদের সম্পত্তির পরিমাণ প্রকাশ করতে পারে।

সুইস ব্যাংকসহ বিদেশি ব্যাংকে জমা টাকা ফিরিয়ে আনতে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের শুনানির সময় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

আজ শুনানিকালে আবেদনকারীদের একজন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান হাইকোর্ট বেঞ্চকে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশ থেকে অর্থপাচার খুবই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শেখ তৌহিদুল হকের তৈরি গবেষণাপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এই আইনজীবী বলেন, জাতীয় জিডিপির ৬০ শতাংশ ১৯৭৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আন্ডারগ্রাউন্ড অর্থনীতিতে চলে গেছে।

আরও পড়ুন : সরকারকে ৪ কোটি মার্কিন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক

আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান জানান, মালয়েশিয়া কিছু বাংলাদেশি অর্থ পাচারকারীদের সেকেন্ড হোমে পরিণত হয়েছে।

তিনি হাইকোর্ট বেঞ্চকে জানান, ২০১৫ সালের ৭ জুন পুঁজিপতি ব্যবসায়ী মুসা বিন শমশের তার সম্পদের বিবৃতি দুদকের কাছে জমা দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, তার কাছে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ১৯ কোটি টাকা মূল্যের অলঙ্কার সুইস ব্যাংকে জমা আছে। যা ফ্রিজ হয়ে গেছে।

আবদুল কাইয়ুম খান যুক্তি দেখান, দুদক এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অর্থপাচার প্রতিরোধ এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

তার যুক্তি শোনার পর হাইকোর্টের বেঞ্চ পুনরায় শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেছেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আগামীকাল তাদের যুক্তি পেশ করবেন।’

সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করেছিলেন। যাতে বাংলাদেশি নাগরিক ও সংস্থাগুলো কর্তৃক সুইস ব্যাংকসহ বিদেশি বিভিন্ন ব্যাংকে জমা অর্থ ফেরত আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

তারা সম্মিলিতভাবে এটিকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে জমা দেন। যাতে আদালত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশি ব্যাংকে অবৈধ অর্থ জমা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায়।

সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার
এন এ/ ০৭ ফেব্রুয়ারি

Back to top button