ব্যবসা

গরুর মাংসের কেজি এখন ৮০০ টাকা

ঢাকা, ০৭ মার্চ – শবে বরাত এলেই গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দেয়া হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। মাংস সিন্ডিকেট শবে বরাতের রাতের আগে গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়ানোর সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

গত ২ সপ্তাহ ধরে ৩ ধাপে ৫০ টাকা করে দাম বাড়িয়ে এক কেজি গরুর মাংস এখন ৮০০ টাকা। আর খাসির মাংস ১২০০ টাকা। ফলে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে গরুর মাংস কেজিতে বাড়ল ১০০ টাকা এবং খাসির মাংসের দাম বাড়ল ২০০ থেকে ২৫০টাকা।

অথচ বাজারে গরুর কোনো সংকট দেখা দেয়নি, বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক সমস্যাও সৃষ্টি হয়নি, যার কারণে গরু-ছাগলের মাংসের দাম বাড়াতে হবে।

শবে বরাত এসেছে, মাংসের চাহিদা বেড়েছে- তাই সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া মাংসের দাম বৃদ্ধির পেছনে আর অন্য কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, অহেতুক পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দেশের জনগণের অর্থ লুটপাট করা ‘সামাজিক সংক্রমণ’-এর মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত। তাই সারা দেশে গরুর মাংসের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। আর এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করেই গরুর মাংসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত ফেব্রব্রুয়ারির ১ তারিখেও ঢাকায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা। ১৫ ফেব্রুয়ারি বেড়ে হয়েছে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা, ২৮ ফেব্রুয়ারি বেড়ে হয়েছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা।

যদিও সোমবার (৬মার্চ) টিসিবির মূল্য তালিকায় প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা লেখা আছে, তবে রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ দামে কোথাও গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়নি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এক কজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকায়।

কল্যাণপুরের মাংস ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শনিবারও প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি করেছি কিন্তু মঙ্গলবার বিক্রি করছি ৮০০ টাকা কেজিতে। মূলত শবে বরাতের কারণে চাহিদা বেড়েছে, তাই দাম বেড়েছে।’ তা ছাড়া গাবতলীতে গরুর দামও বেড়েছে। আমরা মাঝারি আকারের যে গরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় কিনেছি, সমবার কিনতে হয়েছে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়।

গরু-খাসির মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর মনিটরিং করছে কি না- জানতে চাইলে মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আছে, মন্ত্রণালয় আছে। মাংসের দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে এবং বাজার অভিযান সম্পর্কে এসব প্রতিষ্ঠান কি করছে- তাদের কাছেও জানতে চান। বিষয়টি তাদের আওতার মধ্যে পড়ে। তবে আমরাও মাংসের বাজারে অভিযানে নামব।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে প্রায় ৮ মিলিয়ন টন মাংসের চাহিদা। এর বিপরীতে প্রায় ৯ মিলিয়ন টন মাংস উৎপাদন হচ্ছে। তারপর বিদেশ থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি করা হচ্ছে। প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৩ মিলিয়ন টন মাংস আমদানি করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয় ভারত থেকে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৭ মার্চ ২০২৩

Back to top button