সিলেট, ১৭ সেপ্টেম্বর- রাগীব আলী ও মকবুল হোসেন লেচু মিয়া। সিলেটসহ সারাদেশে দু’জনই বেশ আলোচিত। দু’জনই ধর্নাঢ্য ব্যক্তি; আর তাদের ধন-দৌলত আর শান শাওকাতের কথা মুখেমুখে। লোকসমাজে তাদের ধন দৌলত নিয়েও প্রচলিত আছে মুখরোচক কথাবার্তা।
অথচ সিলেটের এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিই আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। একজন জালিয়াতির কারণে, অন্যজন টঙ্গীর ট্যাম্পাকো কারখানার মালিক হওয়ার কারণে।
রাগীব আলীর নামের সাথে তার শুভাকাঙ্খিরা ব্যবহার করে থাকেন ‘দানবীর’। আলাপচারিতা কিংবা গল্পচ্ছলে অনেকেই বড়লোকদের প্রতি রাগ দেখাতে গিয়ে ব্যবহার করেন ‘তুমি কি তা রাগীব আলী অই গেছোনি?’ অনুরুপ মকবুল হোসেন লেচু মিয়ার ক্ষেত্রে প্রচলিত আছে- ‘সুরমা নদীর পানি হুকাই যাইবো কিন্তু লেচু মিয়ার টাকা শেষ অইতো নায়!’
তারাপুর চা বাগানের জালিয়াতি মামলাসহ পৃথক আরোও মামলায় রাগীব আলী ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে রয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। কথিত ‘দানবীর’ তার ছেলে, মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে নিয়ে জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
আর ট্যাম্পাকো ফয়েলস কারখানাতে বিস্ফোরণের পর থেকেই পলাতক আছেন সিলেট-৩ আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়া। কেউ তার কোন সন্ধান পাচ্ছেনা। ঘটনার পর পরই লেচু মিয়া পলাতক রয়েছেন। তার মুঠোফোনও বন্ধ আছে।
গত ১১ আগস্ট শনিবার ভোরে টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পর কারখানাটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪০ জনের কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় এখনো আরো অনেকে নিখোঁজ আছেন।
এদিকে দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও ভূমি আত্মসাতের দুটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ভারত চলে যান রাগীব আলীসহ তার পরিবারের সদস্যরা। তারা জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারত যান; নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে এমন সংবাদ প্রকাশ করে গণমাধ্যম। এরপর বিষয়টি অনুসন্ধান করে পুলিশ। অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলে রাগীব আলী ও পরিবারের সদস্যরা ভারতেই পালিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা স্বশরীরে জকিগঞ্জে গিয়ে বিষয়টি খোঁজখবর নেন। তিনিও নিশ্চিত হন যে জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে গ্রেফতারি পরেয়ানা জারির দিন বিকালেই পালিয়েছেন রাগীব আলী ও তার স্বজনরা।
এফ/১০:৩০/১৭ সেপ্টেম্বর