ঢাকা, ১০ এপ্রিল- আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে এবং আগামীকাল সোমবার ট্যানারি স্থানান্তরের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতের কাছে জমাদানের শর্তে প্রায় পাঁচ ঘন্টা পুলিশ হেফাজতে থাকার পর মুক্তি পেলেন সেই তিন ট্যানারি মালিক। তারা হচ্ছেন- পূবালী ট্যানারিজের মাহবুবুর রহমান, রুমি লেদার ইন্ডাস্ট্রিজের গিয়াস উদ্দিন আহমেদ পাঠান ও মেসার্সপ্যারামাউন্ট ট্যানারিজের মো.আকবর হোসেন।
আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পর রোববার (১০ এপ্রিল) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ তিন মালিককে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
এর আগে সকালে আদালতে তারা হাজিরা দিতে আসার পর ব্যাখ্যা না দেওয়ায় তিন মালিককে কোর্ট তত্ত্বাবধায়কের মাধ্যমে পুলিশে সোপর্দ করার আদেশ দেন হাইকোর্ট। পরে কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক তাদেরকে কোর্ট পুলিশের কাছে রাখেন।
আজ বিকেলে এই মালিকের আইনজীবী ফিদা এম কামাল আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, শুনানি শেষে আদালত তাদেরকে শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমা করেন। শর্ত হলো আগামীকাল সেমাবার দুপুর একটার মধ্যে ট্যানারি সরানোর বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেবেন এ শর্তে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেন।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
দীর্ঘদিন ধরে ওই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হহাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প অন্যত্র সরিয়ে নিতে ২০০৯ সালের ২৩ জুন হাইকোর্ট ফের নির্দেশ দেন।
সরকারপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও স্থানান্তর না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করেন পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মনজিল মোরসেদ।
এ মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে গত বছরের ২১ এপ্রিল আদালতের তলবে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন শিল্প সচিব।
এরপরও ওই দশ প্রতিষ্ঠান হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরের পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ফের আদালত অবমাননার অভিযোগে আরও একটি আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ।
এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট হাইকোর্ট দশ কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। এ রুলের পর দশ মালিককে তলব করে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২১ মার্চ আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। ২৩ মার্চ এ আবেদনের শুনানি শেষে ব্যাখ্যা দিতেআদালত ১০ মালিককে ১০ এপ্রিল তলব করেন।
আর/১০:২৪/১০ এপ্রিল