সুভা, ২২ ফেব্রুয়ারী- প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র ফিজিতে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় উইন্সটনের তাণ্ডবের পর উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।
শনিবার রাতে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় উইন্সটন ঘন্টায় ২৩০ কিলোমিটার (১৪৩ মাইল/ঘন্টা) থেকে সর্বোচ্চ ৩২৫ কিলোমিটার (২০২ মাইল/ঘন্টা) বাতাসের বেগ নিয়ে দেশটিতে আঘাত হানে। সেইসঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং ৪০ ফুটের বেশি উঁচু ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ে।
কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা ঝড়ো বাতাসের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি উড়ে যায় এবং দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পানি সরবরাহ ও সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ে।
তবে শেষ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়টি গতিপথ পরিবর্তন করায় রাজধানী সুভা তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়।
উপগ্রহের ছবিতে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি গ্রাম বিশেষ করে উপকূলবর্তী কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফিজির প্রধান দ্বীপ ভিটি লেভুতে ভূমিধস হয়েছে।
সেখানকার একজন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, “যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, এটা অন্য কোনো দেশ।”
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সোমবার ২০ জনের মৃত্যু হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রায় ৭৫০টি আশ্র্রয় কেন্দ্রে এখনও হাজার হাজার মানুষ অবস্থান করছে। তবে আস্তে আস্তে তারা নিজ নিজ বাড়িঘরে ফেরা শুরু করেছে।
সরকার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোকে পরিবহন এবং ত্রাণ সরবরাহ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশটির বিদ্যালয়গুলো এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তবে ত্রাণ পরিবহন ও পর্যটকদের ফিজি ত্যাগের জন্য সোমবার প্রধান বিমানবন্দরটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড থেকে রাজধানী সুভায় ত্রাণ পৌঁছেছে। দুর্গম এলাকায় উদ্ধার কাজের জন্য দেশদুটি কয়েকটি হেলিকপ্টারও ফিজিতে পাঠিয়েছে।
ফিজির প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক বাইনিমারামা এই ঘূর্ণিঝড়কে ‘কঠোরতম অগ্নিপরীক্ষা’ বলে বর্ণনা করেছেন।