সুনামগঞ্জ, ০৯ ফেব্রুয়ারী- সুনামগঞ্জের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় পাঁচ দিন ধরে বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ, ক্ষতি নির্ধারণ এবং এলাকার মানুষের আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছেন মার্কিন আইন সহায়তা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফোলি হোগের প্রতিনিধিরা।
গতকাল রোববার এ কাজে তাঁরা গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করেন। নাইকোর দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে বাংলাদেশের পক্ষে আইনি লড়াই করছে ফোলি হোগ।
বাংলাদেশ তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি বাপেক্সের উপমহাব্যবস্থাপক ভূতত্ত্ববিদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল দুপুর ১২টায় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ড্রোন ব্যবহার করে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র এবং আশপাশের এলাকার ত্রিমাত্রিক ছবি তোলেন এবং তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। ড্রোনটি একাধিকবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে ওড়ানো হয়। গতকাল মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাপেক্সের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আবুল হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সদস্যদের কার্যক্রম দেখতে গত শুক্রবার টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শনে আসেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ৩ ফেব্রুয়ারি ওই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের ১১ জন বিশেষজ্ঞ টেংরাটিলায় আসেন। ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেংরাটিলায় অবস্থান করবেন তাঁরা। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কানাডীয় কোম্পানি নাইকো টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে কূপ খননকালে ২০০৫ সালে দুই দফা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এরপর নাইকো বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে দুটি মামলা দায়ের করে। মামলা দুটির প্রয়োজনেই টেংরাটিলায় এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। এলাকার ক্ষয়ক্ষতি ও মানুষের জীবনযাত্রায় কী ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সেটিও দেখা হচ্ছে। এসব তথ্য-উপাত্ত মামলায় ব্যবহার করা হবে।
টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি প্রথম এবং ২৪ জুন দ্বিতীয় দফায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) বিস্ফোরণের ঘটনার পরে আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে যে দুটি মামলা দায়ের করে, এর একটিতে নাইকো সরবরাহকৃত গ্যাসের মূল্য চাচ্ছে। আর অন্যটিতে নাইকো চাচ্ছে তাদের কারণে এখানে দুর্ঘটনা ঘটেনি—এই মর্মে আদালতের ঘোষণা।