বগুড়া, ৩০ এপ্রিল- বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ইরি বোরো ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই ধানের মাঠগুলো একেবারে ফাঁকা হয়ে যাবে। গতবারের চেয়ে এবার ধানের ফলন কম হয়েছে। তবে হাট-বাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ধান বেঁচতে আসা অনেক কৃষক।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার এ উপজেলায় বোরো চাষে ২০ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ২০ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৯ হাজার ৯শ ৯ মেট্রিকটন চাল। ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৬৩ মেট্রিকটন। সে তুলনায় ফলন কমেছে। গত সোমবার উপজেলার রনবাঘা হাট-বাজারে ধানের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, এবার কৃষকেরা যদিও ধানের ফলন কম বলছে তবে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় তারা বেশ আনন্দবোধ করছে। গতবার এই সময় বাজারে পারি জাতের ধানের দাম ছিল ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা মণ। এবার সেই তুলনায় প্রতিমণ ধান বিক্রয় হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। যে কারণে কৃষকেরা আবাদী খরচ পুষিয়ে লাভের অংক গুনছে। এঅবস্থায় ধানের বাজার স্থিতিশীল থাকলে কৃষকেরা বেশ লাভবান হবে বলে এমন ধারনা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। কৃষক আবুল হোসেন জানান, ২০ বিঘা জমিতে পারি জাতের ধান লাগিয়েছি। এরমধ্যে ৫বিঘা জমির ধান কাটা হয়েছে। প্রতিবিঘা জমিতে ২২ থেকে ২৪ মণ করে ধানের ফলন হয়েছে। গতবার প্রতিবিঘা জমিতে ধান হয়েছিল ২৮ মণ থেকে ৩০ মণ। তবে বাজারে ধানের দাম কম ছিল। এবার প্রথমেই মিনিগেট ধান কেটে প্রতিমণ ৯৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি। যে কারণে লাভের অংকটা বুঝতে পারছি। মিনিগেট ধান কাটার শুরুতেই প্রতিমণ ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা বিক্রয় হয়েছে। বর্তমানে মিনিগেটের বাজার একটু কমেছে বলেও জানান তিনি। কৃষক আলহাজ গফুর হোসেন বলেন, আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তবে এ উপজেলার কৃষকেরা ধান বিক্রয় করে বেশ লাভবান হবেন। আমি ৮০ বিঘা জমিতে পারি ও মিনিকেট জাতের ধান লাগিয়েছি। এরমধ্যে ১০বিঘা জমির ধান কাটা পড়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই জমির ধান কাটা মাড়াই শেষ হবে। ফলন একটু কম হয়েছে। বাজারে ধানের দাম বেশী পাওয়ায় খরচ পুষিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে পারি জাতের ধান বিক্রয় হচ্ছে প্রতিমণ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, মিনিগেট ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা ও জিরা ধান ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মশিদুল হক জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের লিফলেটের মাধ্যমে কৃষকদের সাথে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ধানের ফলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমিতে পরিমাণ মত পানি না থাকার কারণে ফলন একটু কমেছে। তবে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা বেশ আনন্দিত।