বাংলাদেশে শহরাঞ্চলের ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ হিসেবে ফাস্টফুড সংস্কৃতি দায়ী। সেই সাথে ধূমপান ও অতিরিক্ত স্থুলতার কারণে প্রতিবছর উদ্বেগজনকভাবে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাই সময় থাকতেই এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, ডায়াবেটিক ফেডারেশন ও নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে বাংলাদেশে উন্নত ডায়াবেটিস চিকিৎসা সেবা প্রদান, ডায়াবেটিস বিষয়ক গবেষণা ও প্রতিরোধে এই সংস্থাগুলোর সাম্প্রতিক কর্মসূচির অবহিত করার উদ্দেশ্যে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডা. আকতার হোসেন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি প্রফেসর এ কে আজাদ খান, সমিতির সেক্রেটারি মো: সাইফুদ্দিন ও দৈনিক ইনকিলাবের সিটি এডিটর জাকারিয়া কাজল।
প্রেস কনফারেন্সে আরো জানানো হয়, গ্রামাঞ্চলেও ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। গ্রামীণ জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব ও পরিশ্রমের তুলনায় কম ক্যালরি গ্রহণ করার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে তারা জানান।
গর্ভকালীন মায়ের পুষ্টিহীনতায় জন্ম নেয়া শিশুরও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে এমন উল্লেখ করে তারা জানান, আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ৮০ ভাগ মেয়েরই বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগে। তাই তারা অপুষ্টি নিয়েই আরেকটি অপুষ্টির শিকার শিশুর জন্ম দেয়। ফলে তাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে।
এছাড়া শহারঞ্চলে মানুষ বেশী মাত্রায় কর্মে ব্যস্ত থাকায় তাদের সন্তানদের ফাস্টফুডে ঝুঁকে পড়ার কারনে পরবর্তীতে তাদের মধ্যেও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল চুরাশি লাখ এবং বর্তমানে যে হারে আক্রান্ত হচ্ছে তার ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে এর সংখ্যা হবে এক কোটি ৮৮ লাখ। তাই এর বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে বলে মনে করেন তারা।