ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি- নতুন মন্ত্রিসভায় যেভাবে পুরনোদের বাদ দেয়া হয়েছে তার শঙ্কা গিয়ে লেগেছে জাতীয় সংসদেও। মন্ত্রিসভার এ পরিবর্তনের পর সবার চোখ এখন জাতীয় সংসদের নেতৃত্বের দিকে। যেসব মন্ত্রীরা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন, নানা কর্মকাণ্ডে দলীয় ইমেজ নষ্ট করেছেন নবগঠিত মন্ত্রিসভায় ঠাঁই মেলেনি তাদের। পুরনো মন্ত্রীদের অধিকাংশই বাদ পড়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভার মতোই জাতীয় সংসদের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতে পারে। চিফ হুইপসহ ছয় হুইপ পদে রদবদল কিংবা পরিবর্তনের জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিবর্তনের পেছনে হুইপদের দায়িত্বহীনতা, নেতৃত্বের অদক্ষতা, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দুর্নীতি দায়ী।
নবম জাতীয় সংসদে চিফ হুইপের দায়িত্ব বর্তায় উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদের উপর। এছাড়া, হুইপের দায়িত্ব পালন করেন, নুর এ আলম চৌধুরী লিটন, আ স ম ফিরোজ, অধ্যক্ষ আ. ওয়াহাব, মির্জা আজম, মুজিবল হক ও সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি।
চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ এর প্রতি অভিযোগ- ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন তিনি। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন নানাভাবে। অভিযোগ- পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজারে (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) নিজের পজিটিভ ইমেজ শেষ পর্যন্ত বজায় রাখতে পারেননি তিনি। এছাড়া তার ভাইদের বিরুদ্ধেও রয়েছে জমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির অভিযোগ।
হুইপদের মধ্যে নূর এ আলম চৌধুরী লিটনের ভাই মজিবুর রহমান নিক্সন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফরুল্লাহকে পরাজিত করেছেন। নুর এ আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধেও রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ, এছাড়া ভাই নিক্সনের কারণেও প্রধানমন্ত্রীর দূরত্বে রয়েছেন চৌধুরী লিটন। হুইপ আ. ওয়াহাবকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় নি এবারের নির্বাচনে। এলাকায় টেন্ডারবাজি, আধিপত্য বিস্তার, সংখ্যালঘুদের বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এলাকার হাতুড়ি বাহিনীরও পৃষ্ঠপোষক তিনি।
হুইপদের মধ্যে আগেই মন্ত্রী হয়েছেন মুজিবুল হক। এবারও তিনি মন্ত্রিসভায় রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। অপর হুইপ মির্জা আজমও প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। হুইপদের মধ্যে বাকি কেবল সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি।
হুইপদের মধ্যে আ সম ফিরোজই সংসদীয় নেতৃত্বের হাল ঠিকঠাক বজায় রেখেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে সংসদীয় দায়িত্বে এ যোগ্য প্রতিদান পাবেন। আ স ম ফিরোজকে চিফ হুইপের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে- এমনটি আভাস মিলেছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে।
নবগঠিত মন্ত্রিসভার মত সংসদের নেতৃত্বের প্রধানমন্ত্রী হয়তো কোনো চমক দেখাতে পারেন-এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।