ঢাকা, ১০ নভেম্বর- অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। টিভি পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দাতেও দেখিয়েছেন দক্ষতার পরিচয়। কাজ করেছেন ‘মনপুরা’, ‘হালদা’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘দহন’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে। পর্দায় এই মানুষটির অভিনয় বরাবরই দর্শকদের নজর কেড়েছে।
সম্প্রতি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৭’-এর শ্রেষ্ঠ কৌতুক চরিত্রে নির্বাচিত হয়েছেন বাবু। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম ফেসবুকে চলছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন-এর মুখোমুখি হয়েছেন ফজলুর রহমান বাবু।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ক’দিন ধরেই বেশ আলোচনা শুনছি। অনেকে জুরিবোর্ডকে দোষারোপ করছে। এখানে জুরিবোর্ডের কোনো দোষ নেই। কারণ পুরস্কারের জন্য ক্যাটাগরি নির্বাচন করে দেয় ছবির পরিচালক। এ ছবির পরিচালক বদরুল আনাম সৌদ সব ক্যাটাগরিতে একজন করে অভিনেতার নাম দিয়েছেন। এখানে তিনি আমার নামটি কৌতুক চরিত্রে পাঠিয়েছেন, কৌতুক অভিনেতা হিসেবে নয়। আমরা তো জুরিবোর্ডকে দোষ দিতে পারি না। ভুল হলে হয়েছে, পরিচালকের।’
কৌতুক অভিনেতা আর কৌতুক চরিত্র প্রসঙ্গে বাবু আরও বলেন, ‘যারা লেখালেখি করে তারা বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমি অনেককেই দেখেছি, তারা লিখেছেন শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা। আসলে শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা আর শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে’র মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।’
দর্শক ও পাঠকদের উদ্দেশে বাবু প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কৌতুক অভিনয়টা কি খুবই নিম্নমানের অভিনয়? কৌতুক অভিনয়টা যদি নিম্নমানের না হয়, তবে এটা নিয়ে আমার আক্ষেপ থাকবে কেন? কৌতুক চরিত্র বলতে আমরা সাধারণত যেটি বুঝতাম, আগের যে ফর্মেটেড ফিল্মে আছে। সেটাকে আমরা কৌতুক চরিত্র না বলে ভাড়ামি বলতে পারি। আমি যে চরিত্রে অভিনয় করেছি, সেটা ওই অর্থে কৌতুক চরিত্র না। কিন্তু এটা অনেক রসাল ছিল। আগের ফিল্মগুলোর মতো না। সেই কারণে পরিচালক হয়তো মনে করেছে, এটা এই ক্যাটাগরিতে যায়। কিন্তু এটা যে খুব অপমানজনক, তা কিন্তু না।’
সাধারণ দর্শকদের দোষ দেন না জানিয়ে এই অভিনেতা বলেন, এই পুরস্কারগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা পেয়েছে, এরা অভিনয় শিল্পী হিসেবে হয়তো সেই মানের না। তারা হয়তো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাড়ামো করেছে। আর ভাড়ামো করেছে বলেই হয়তো এটা নিম্নমানের শিল্প হয়ে গেছে। কিন্তু আমি মনে করি, হাস্যরস একটা উচ্চমান সম্পন্ন শিল্প। তাহলে কেন এই পুরস্কারকে আমি প্রত্যাখান করবো? এটা এমন কোনো বড় অপরাধ হয়নি তাদের।’
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন ফজলুর রহমান বাবু। জানতে চাওয়া হলো তার অনুভূতির কথা। তিনি বলেন, ‘‘যেকোনো পুরস্কার বা সম্মানই আনন্দের। আর প্রতিটি পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি প্রথমবারের মতোই হয়। অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ছিলাম ২০০৪ সালে। ‘শঙ্খনাদ’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। এরপর ২০১৭ সালে ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ ছবির জন্য একই ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছিলাম। প্রতিবারই নিজের মধ্যে একই রকম আনন্দ কাজ করেছে।’’
জনপ্রিয় এই অভিনেতার কাছে জানতে চাওয়া হলো গান-বাজনার খবর।তিনি বলেন, ‘‘আপাতত গান-বাজনা নিয়ে খুব একটা ভাবছি না। মাঝে মধ্যে বিছিন্নভাবে দু’একটা গান করছি, যা ইউটিউবে প্রকাশ হয়। কিছুদিন আগে ‘দুঃখ দিবা কারে’ শিরোনামে একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছি।’’
এখন কি নিয়ে ব্যস্ত জানতে চাইলে ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘‘আপাতত ছবির কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। আগামীকাল পটুয়াখালী যাবো ‘পায়রার চিঠি’ ছবির শুটিং করতে। ফিরবো ১৫ তারিখে। এ ছাড়া হাতে আরও কিছু ছবির কাজ আছে।’’
এন কে / ১০ নভেম্বর