ঢাকা, ১৭ অক্টোবর- এনসিএল শুরুর আগে হঠাৎ করেই আলোচনায় এসেছে খেলোয়াড়দের ফিটনেস। মূলতঃ আফগানিস্তানের কাছে টেস্ট হারের পরই ফিটনেসের সমস্যা নিয়ে কথা উঠে যায়। আফগান ক্রিকেটারদের অসাধারণ ফিটনেসের তুলনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নড়বড়ে ফিটনেস খুবই দৃষ্টিকটু হয়ে দেখা দেয়। নানা প্রশ্নও উঠে যায়।
যার ফলে জাতীয় লিগ শুরুর আগে হঠাৎ ফিটনেস টেস্ট নেয়া হয় ক্রিকেটারদের এবং তাদের ফিটনেস বাড়ানোর দিকেও নজর দেয়া হয়। তবে এবার হঠাৎ করে এ বিষয়টাতে নজর দেয়া হলেও, আগামী বছর থেকে কোনো ছাড় দেবে না বিসিবি। স্পষ্ট করে বিষয়টা জানিয়ে দিলেন বিসিবি সভাপতি।
আজ মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে তিনি ফিটনেসের বিষয়টা নিয়ে বললেন, ‘আমরা ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি আপনারা দেখেছেন। আমরা যে ফিটনেস লেভেল দিয়েছি, আমি বলেছি সামনের বছর আমরা এটা আরেকটু বাড়াতে চাই এবং এটা আগেই জানিয়ে দিতে চাই। এবার যেমন শেষ মুহূর্তে থাকায় অনেকের আপত্তি ছিল। আমি বলেছি আগে থেকে জানিয়ে দিতে, যেন সবাই এক বছর আগেই জানে।’
প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএল- সব জায়গায় ফিটনেস টেস্ট দিতে হবে ক্রিকেটারদের। পাপন বলেন, ‘আমাদের যে প্রিমিয়ার লিগ আছে সেটাতেও কিন্তু এই ফিটনেস টেস্ট পাশ করে আসতে হবে। ফিটনেস টেস্ট আজকে বসে ঠিক করেছি সব ঢাকায় হবে। বাইরের থেকে করলে হবে না। এখানে এসে সবাইকে একই জায়গায় টেস্ট দিতে হবে। সুতরাং, সময় আছে তাদের উন্নতি করার এবং এটা উচিত। এবার শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে (এ দলের) আমাদের অনুধাবন হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় আমরা জিতে এসেছি। অথচ ম্যাচে কিন্তু দুইদিন পরে দ্বিতীয় ইনিংসে গিয়েই দেখি কেউ খেলতে পারছে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তো এইগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম দিকে অসুবিধা হবে জানি, কিন্তু আস্তে আস্তে সবাই পারবে (ফিটনেস টেস্টে ভালো করতে)। অবশ্যই তারা পারবে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বিশেষ করে পেস বোলাররা যারা, তাদের ফিটনেসে বেশি সমস্যা। বাইরের ওরা (বিদেশি ক্রিকেটাররা) একটার পর একটা টেস্ট খেলেই যাচ্ছে কিচ্ছু হচ্ছে না, আমাদের এখানে একটা ওয়ানডে খেলেই ইনজুরি। ফিটনেসে যদি এখন থেকে হাত না দেই আমাদের ক্রিকেট আর সামনে আগাবে না। কাজেই ফিটনেসের প্রতি একটা জোর দিয়েছি।’
নতুন নতুন খেলোয়াড়ের সন্ধানে নেমেছে বিসিবি। এ বিষয়টা নিয়ে পাপন বলেন, ‘নতুন প্লেয়ারের সন্ধানে নেমেছি। অনেক পরীক্ষা নীরিক্ষা হবে। এতোদিন শুধু জেতার জন্য খেলেছি। জিততেই হবে এমন মানসিকতায়। এখন কিন্তু আমরা পরীক্ষা করব। অলরেডি কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা দেখেছেন। অনেক কিছু হচ্ছে, হবে। তাতে সাময়িকভাবে মনে হবে, এটা কেন হচ্ছে, এটা কেন করছি? কিন্তু সব কিছুই আমাদের লংটার্ম চিন্তা করে করা হচ্ছে। ২০২০ পর্যন্ত বেশকিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা হবে। কিন্তু ২০২১ এ গিয়ে আমরা যে টিমটা বানাব সেটা ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ খেলার জন্য একটা সলিড টিম বানাতে চাচ্ছি। এখানে যেন কারো কোনো চিন্তা ভাবনা না থাকে কি হচ্ছে না হচ্ছে, এটা হলে ভালো হত। যা করার এখনই করে ফেলব। আমরা একটু লংটার্ম চিন্তা করে কাজগুলো করছি।’
বিপিএলের দলগুলোয় জাতীয় দলের পজিশন অনুযায়ী খেলোয়াড়দের খেলানোর চিন্তা করছে বিসিবি। এ বিষয় নিয়ে পাপন বলেন, ‘শুধু টপ অর্ডার নয়, যে যেই পজিশনে খেলে। ধরুন মোহাম্মদ মিঠুন, আমরা যাকে চারে বা পাঁচে খেলাব ভেবে রাখছি, তাকে খেলানো হচ্ছে সাতে বা আটে। না এমন হওয়া যাবে না। সাত আটে যারা জাতীয় দলের খেলার জন্য সামর্থ্যবান মনে হবে তাদের সাত আটেই খেলাবো। এটা শুধু ওপেনারের ক্ষেত্রে নয়। প্রত্যেক পজিশনে আমরা চাই জাদের ধারণা করছি যে, প্লেয়ারগুলো ভালো করবে ওদের ওই জায়গায়ই পরীক্ষা করা হবে।’
ফিটনেসের বিষয়টা আগামী বছর থেকে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েই করা হবে বলে জানান পাপন। তিনি বলেন, ‘প্রস্তুত না হয়েই অনেক কিছু আমাদেরকে বলতে হচ্ছে যে এটা আমরা করবো। সেটা কয়েকজনের জন্য চাপ হয়ে যাচ্ছে, এটা আমরা স্বীকার করছি। কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আর আমরা সেটা নিয়েছি। এখন আমরা ২০২১ সালের বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে দল বানাতে চাই, যে দলটা আমাদের আরও ৪-৫ বছর সার্ভিস দিতে পারবে।’
সূত্র : জাগো নিউজ২৪
এন কে / ১৭ অক্টোবর