নাটোর, ০৬ অক্টোবর- জমি নিয়ে ভাইয়ে-ভাইয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সারাদিন বৃদ্ধ মাকে অভুক্ত অবস্থায় ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন এক ছেলে। দুপুর পেরিয়ে গেলেও খাবার না পেয়ে ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করতে থাকেন বৃদ্ধ মা। পরে প্রতিবেশীদের দেওয়া খবরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। মুক্ত মায়ের খাবারেরও ব্যবস্থা করেন পুলিশ সদস্যরা। শনিবার (৫ অক্টোবর) নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দক্ষিণ মুরাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ওই বৃদ্ধাকে তার অন্য ছেলেদের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। তার ওপর আর কোনও অবহেলা বা নির্যাতন হয় কিনা তা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বৃদ্ধার পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ইউএনও জানান, ভুক্তভোগী ওই মায়ের নাম হাজেরা বেওয়া (৯০)। তিনি ওই গ্রামের মৃত বিশারদের স্ত্রী। তার চার ছেলে। এক ছেলে প্রতিবন্ধী। স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন হাজেরা বেওয়া। এরপর থেকে তিনি ছোট ছেলে আক্তারুজ্জামানের বাড়িতে থাকলেও অন্য ছেলেরাও পালাক্রমে মাকে খাবার দেওয়া ও ভোরণ-পোষণের দায়িত্ব নেন।
তবে শনিবার জমি নিয়ে ভাইদের সঙ্গে আক্তারুজ্জামানের ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তিনি মাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে স্বপরিবারে বাড়ি ছেড়ে চলে যান।
এদিকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও খাবার না পেয়ে ক্ষুধার জ্বালায় কাতরাচ্ছিলেন ওই বৃদ্ধা। পরে জানালা দিয়ে তার অবস্থা দেখে প্রতিবেশীরা খবর দিলে তাকে মুক্ত করা হয়। এসময় হাজেরা বেওয়ার খাবারের ব্যবস্থা করেন পুলিশ সদস্যরা।
এ বিষয়ে হাজেরা বেওয়ার অভিযুক্ত সন্তান আক্তারুজ্জামানের দাবি, অন্য ভাইদের হামলার ভয়ে তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান। পরে মার কথা মনে হলেও ভয়ের কারণে বাড়ি এসে তালা খুলতে সাহস পাননি। কি করবেন ভাবতে থাকা অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। তবে কাজটি ঠিক হয়নি বলে স্বীকার করেন তিনি।
বৃদ্ধাকে অন্য ছেলেদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ইউএনও প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল বলেন, উপজেলা প্রশাসন হাজেরা বেওয়ার তদারকি করবে।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
এন কে / ০৬ অক্টোবর