আগরতলা, ০১ জুন- ত্রিপুরা বিজেপির অভ্যন্তরের ফাটল এবার প্রকাশ্যে চলে এল। মন্ত্রিসভা থেকে ছাটাই করে দেওয়া হল রাজ্যে পালাবদলের অন্যতম কারিগর সুদীপ রায়বর্মনকে। ত্রিপুরা সরকারের একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব ছিল সুদীপের কাঁধে। সেই দপ্তরগুলি ভাগ করে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা।শুক্রবার রাতে এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে ত্রিপুরা সরকার।
সুদীপ রায়বর্মণ দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন বিরোধী দলনেতাও। কিন্তু বছর দুই আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর তোপ দেগে দল ছাড়েন সুদীপ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে ব্রতী হয়ে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ত্রিপুরায় সেসময় প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠে সুদীপ রায়বর্মনের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল। কিন্তু ধীরে ধীরে ত্রিপুরায় তদানীন্তন বাম সরকারের প্রধান বিরোধী হয়ে ওঠে বিজেপি। কাগজেকলমে প্রধান বিরোধী দল হয়েও আন্দোলনের জমি হারায় তৃণমূল। তখন বাকি বিধায়কদের নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান সুদীপ। তাঁর হাত ধরেই ত্রিপুরায় শূন্য থেকে ক্ষমতার শীর্ষে আসে বিজেপি। কিন্তু, সেই তুলনায় মন্ত্রিসভায় ততটা গুরুত্ব পাননি। তাঁর হাতে ছিল স্বাস্থ্য, কৃষি উন্নয়ন, প্রযুক্তি ও জনস্বার্থ দপ্তর। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে মতবিরোধ তৈরি হয় তাঁর। এমনকী তিনি গোপনে কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
গত কয়েক মাস ধরেই ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন কাজের প্রকাশ্যেই বিরোধিতা করছিলেন সুদীপ। এমনকী, রাজ্যে চিকিৎসকদের উপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তুলে নিজের সরকারি নিরাপত্তাও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা একাধিক ঘটনায় স্পষ্ট। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই তাঁর বাবা তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মন কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। সুদীপও সেদিকে পা বাড়িয়ে আছেন বলে খবর। তাঁর মদতেই লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোট ব্যাপক হারে বেড়েছে বলে মনে করছে রাজ্য বিজেপি। আর সেকথা টের পেয়েই তাঁকে ছাঁটাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। ত্রিপুরার রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী সুদীপ। বর্তমান সরকারের অনেক বিধায়কই তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। তাই সুদীপ রায়বর্মন দল ছাড়লে বিজেপি সরকার সমস্যায় পড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
আর এস/ ০১ জুন