নড়াইল, ২৪ ডিসেম্বর- কয়েক দিন ধরে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত মাশরাফি বিন মুর্তজা। নতুন অভিজ্ঞতা ভালো মতোই সামলাচ্ছেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাশরাফি সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটে বেড়ালেন পথে পথে, আবার মন জয় করলেন সবার।
লোহাগড়ার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে নড়াইল-২ আসন। এই আসনে বাংলাদেশের ক্রিকেট-বীরকে পেয়ে এলাকাবাসী অভিভূত, উচ্ছ্বসিত। মাশরাফিও মানুষের ভালোবাসায় আপ্লুত। সবার সহযোগিতায় সমৃদ্ধ নড়াইল গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক।
সোমবার ১৩টা জায়গায় গণসংযোগ করেছেন মাশরাফি। সবুজ পাঞ্জাবি ও কালো চাদর পরে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে তার প্রচারণা। সঙ্গে ছিল ৩০০টি মোটরসাইকেলের বহর। তিনি নিজেও ছিলেন মোটসাইকেলে। মাশরাফির নির্বাচনি প্রচারণায় ছিলেন তার বন্ধু এবং সাবেক ক্রিকেটার সৈয়দ রাসেল ও ডলার মাহমুদ।
রাস্তার প্রতিটি মোড়ে নারী, পুরুষ, শিশু, তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা পেসার। সবার মুখে একটাই কথা, ‘মাশরাফি আমাদের নেতা, তাই নৌকায় ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করতে হবে।’ তাকে এক নজর দেখতে সবাই উন্মুখ। মাশরাফিও জনতাকে নিরাশ করেননি। ব্যস্ততার মাঝেও অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন, এবার অল্প সময়ের জন্য এলেও পরের বার বেশিক্ষণ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নড়াইলের ঝামার ঝোপ বটতলায় এক নববধূ অনেক চেষ্টা করেও তাকে দেখতে পারছিলেন না। ব্যাপারটা মাশরাফির নজর এড়ায়নি। তিনি নিজেই এগিয়ে কথা বলেন সেই নারীর সঙ্গে, ভোট চান নৌকার পক্ষে।
মাশরাফিকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতাএমনকি যেখানে থামার কথা নয়, সেখানেও থেমে জনতার সঙ্গে কথা বলেছেন মাশরাফি। শিশু থেকে বৃদ্ধ বহু মানুষ তার জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে। এত মানুষের ভালোবাসা তো অবজ্ঞা করা সম্ভব নয়!
লোহাগড়ার ছত্রহাজারী মিতালী স্কুল মাঠের পথসভায় তো রীতিমতো ‘জামাই আদর’ পেলেন মাশরাফি! এটা তার শ্বশুর বাড়ির এলাকা, এখানে তার খাতির-যত্নই আলাদা। এই পথসভায় মাশরাফি নন, ভোট চেয়েছেন তার স্ত্রী সুমনা হক সুমি। শুরুতে গান গেয়ে ‘জামাই’ মাশরাফিকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় এক বাউল শিল্পী। এরপর সঞ্চালক ঘোষণা করেন, ‘এখন কোনও স্লোগান হবে না। সবাই নিজের মতো ছবি তোলেন, সেলফি তোলেন। আমাদের জামাই এসেছে।’ সঞ্চালকের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মাশরাফির ওপর রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে ভক্তরা।
মাশরাফির স্ত্রী সুমি বলেছেন, ‘এখানে নির্বাচনের জন্য কথা বলতে হবে তা কখনও ভাবিনি। আপনাদের জামাই নির্বাচন করছে, তার জন্য আমি ভোট চাইতে পারি না! কারণ আপনাদের মেয়ের জামাই হিসেবে তাকে পাশ করানোর দায়িত্ব আপনাদেরই।’
এভাবে একের পর এক পথসভায় অংশ নিয়েছেন দেশের সফলতম ক্রিকেট অধিনায়ক। নড়াইলবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস, ক্রিকেট মাঠের মতো রাজনীতির অঙ্গনেও সাফল্য পাবেন তাদের ঘরের ছেলে, রেকর্ড ভোট পেয়ে নির্বাচিত হবেন সংসদ সদস্য।
এমএ/ ১১:২২/ ২৪ ডিসেম্বর