নিউইয়র্ক, ২ ফেব্রুয়ারি- যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্র্যান্ট হিসপানিকদের মধ্যে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ধর্মান্তরিতদের হচ্ছেন তাদের বেশীরভাগই মহিলা।
নিউজার্সি চ্যাপ্টার অব দ্যা ইসলামিক সেন্টার অব নর্থ আমেরিকার ‘হোয়াই ইজ ইসলাম’স প্রোজেক্টের ২০১২ সালে পরিচালিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩ হাজার ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এই ৩ হাজার ধর্মান্তরিত মুসলিমের মধ্যে ১৯ শতাংশ হিসপানিক মহিলা-পুরুষ।
২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র মসজিদ জরীপ নামে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। ঐ জরীপে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী ৫শ ২৪টি মসজিদের কর্মকর্তা ও ইমামদের সাক্ষাৎকারও গ্রহণ করা হয়। ঐ জরীপে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও জাতিগোষ্ঠির সদস্য যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন, তাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে হিসপানিক-আমেরিকানদের সংখ্যাই অধিক। ঐ জরীপে আরো বেরিয়ে আছে যে যুক্তরাষ্ট্রে ২০০০ সালের তুলনায় ২০১১ সালে মহিলাদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের প্রবণতা ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধর্মান্তরিত মহিলাদের মধ্যে ১২ শতাংশই ল্যাটিনো।
যুক্তরাষ্ট্রের মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের আরেকটি জরীপে দেখা যায়, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা ও নিউইয়র্কের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে ল্যাটিনো ও মুসলিমরা পাশাপাশি নেবারহুডে বসবাস করছে। মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের জরীপে ফলাফল অনুযায়ী এইসব শহরে বিদেশী জন্মগ্রহণকারী ইমিগ্র্যান্টদের মধ্যে ৭২ দশমিক ৫ শতাংশই ল্যাটিনো। জরীপে আরো বলা হয়, এই ৫টি স্টেটেই যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য স্টেটগুলোর তুলনায় মসজিদের সংখ্যা অনেক বেশী।
এমনই একজন ইসলাহ ধর্ম গ্রহণকারী ল্যাটিনো মহিলা নাহেলা মোরালেস। মেক্সিকান বংশোদ্ভূত মোরালেস শুধু নিজেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি বরং এখন তিনি তার নিজ জন্মভূমি মেক্সিকোতেও ইসলাম ধর্ম প্রচারে কাজ করে যাচ্ছেন। ৩৭ বছর বয়স্কা মোরালেসের সাথে আরো কয়েকজন ধর্মান্তরিত হিসপানিক মহিলাও একইভাবে তাদের নিজ নিজ দেশে ইসলাম ধর্ম প্রচারে নিয়োজিত।
উইলফ্রেডো রুইজ একজন নেটিভ পুয়ের্টারিকান। পেশায় এটর্নী। ফ্লোরিডায় বসবাসরত এই ইমিগ্র্যান্ট ২০০৩ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এখন তিনি তার পেশার পাশাপাশি বিভিন্ন নন-প্রফিট প্রতিষ্ঠানের সাথেও জড়িত। সেই সাথে তিনি ল্যাটিনোদের মধ্যে ইসলাম ধর্ম প্রচারেও অবদান রাখছেন।
জুয়ান গ্যালভান আরেকজন ল্যাটিনো আমেরিকান ধর্মান্তরিত মুসলিম। তিনি এখন ল্যাটিনো আমেরিকান দোয়া এসোসিয়েশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর। “ল্যাটিনো মুসলিম:আওয়ার জার্নি টু ইসলাম” নামে একটি বইও লিখেছেন। তিনি মনে করেন দিনদিনই আরো বেশী হারে ল্যাটিনোরা ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে জানার পরেই ল্যাটিনো আমরিকানরা ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।