মধ্যপ্রাচ্য

হামাস ও সৌদির মধ্যে বাড়ছে সুসম্পর্কের

রিয়াদ, ১৫ জুলাই – সৌদি আরবের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আল অ্যারাবিয়ায় গত সপ্তাহের একটি অনুষ্ঠানে হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরো খালেদ মেশালকে দেখা যায়। এর আগে ছয় বছর আগে সৌদির কোনো টেলিভিশনে হাজির হয়েছিলেন হামাসের কোনো কর্মকর্তা। হামাস নেতা খালেদের উপস্থিতিকে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক পর্যবেক্ষকরা।

অনুষ্ঠানটিতে খালেদ মেশালকে সৌদি প্রশাসনের প্রশংসা করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, সৌদি দীর্ঘদিন ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। রাজতন্ত্র ফের হামাসের সঙ্গে এবং তাদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছে, এমন মন্তব্যও করেন তিনি। তার এ বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, চলতি বছরে ইসরায়েলের একাধিক পদক্ষেপের পর হামাসের সঙ্গে সৌদি প্রশাসনের সমঝোতা হয়েছে। তবে এ সমঝোতার মধ্যে কোন বিষয়গুলো রয়েছে তা নিশ্চিত করা যায়নি। তবে হ্যাঁ, এটাও সত্যি যে, সৌদি আরবের কারাগারগুলোতে অনেক ফিলিস্তিনি, বিশেষ করে হামাসের অনেক নেতা দীর্ঘদিন ধরে বন্দি আছেন।

সৌদি রাজতন্ত্র অনেক দিন ধরেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলে আসছে। তবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তেমন কোনো সরব মন্তব্য করেনি রাজতন্ত্রটি। এজন্য মুসলিমবিশ্বে সৌদির সমালোচনাও রয়েছে। অন্যদিকে আরবদের মধ্যে হামাসের রয়েছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। কেন হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে সৌদি প্রশাসন নতুন করে পদক্ষেপ নিচ্ছে এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা মনে করেন, সৌদি আরব ইয়েমেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর এখন বেকায়দায় রয়েছে। বিশেষ করে ইয়েমেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন সহায়তার হাত সরিয়ে নিলে ইয়েমেন থেকে যুদ্ধে জয়ী হয়ে বের হয়ে আসা সৌদির জন্য চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইয়েমেনের হুথিদের পেছনে আছে ইরান। এমন অবস্থায় আরববিশ্বে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে হলে অনেকের সমর্থন দরকার সৌদির। যেহেতু আরববিশ্বে হামাসের গ্রহণযোগ্যতা অনেক, তাই হামাসকে পাশে নিয়ে সেই গ্রহণযোগ্যতাকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করতে চাইছে সৌদি রাজতন্ত্র।

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক মুস্তাফা আল সাওয়াফ মিডলইস্ট মনিটরকে বলেন, ‘হামাস ও সৌদির মধ্যকার সুসম্পর্কের অনেক মাত্রা রয়েছে। আমেরিকার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করে আরব আমিরাত যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেখানে সৌদি নিজেদের লজ্জাজনক অতীত মুছে সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চাইছে। তাই হামাসের সঙ্গে সুসম্পর্কের মানে, বিশ্বের সুন্নি মুসলিমদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা।’

তথ্যসূত্র: দেশ রূপান্তর
এস সি/ ১৫ জুলাই

Back to top button