জাতীয়

মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন

ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি – মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্বাচনি কর্মকর্তা কাজী হাবিবুল আউয়াল স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আমি ঘোষণা করছি যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের জন্য জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের তারিখ অর্থাৎ ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর মাত্র একজনের মনোনয়নপত্র বৈধ থাকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন ১৯৯১ (১৯৯১ সালের ২৭ নম্বর আইন) এর ধারা অনুসারে মো. সাহাবুদ্দিন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হলেন।’

এর আগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কাজী হাবিবুল আউয়াল মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে সে সময় তিনি জানান, আজই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এ বক্তব্যের কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো।

রোববার সিইসির কাছে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদসহ কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। সেদিনই ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যেহেতু একজনের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে, তাই সোমবার যাচাই-বাছাই শেষে সব ঠিকঠাক থাকলে মো. সাহাবুদ্দিনই হবেন দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট।

সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৪ এপ্রিল। পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তিনি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, তার আর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। তার জায়গায় নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

উল্লেখ্য, মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৮ সালে পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন। পরের বছর পাবনার শহিদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। স্বাধীন বাংলা ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি হিসেবে পাবনায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনকারী তিনি।

চুপ্পু জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার প্রতিবাদ করায় ২০ আগস্ট সামরিক আইনের সাত ধারায় আটক হয়েছিলেন তিনি। সেখানে প্রায় তিন বছর কারারুদ্ধ ছিলেন সাহাবুদ্দিন।

পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে বিচার বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। ওই সময় হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনাও ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে ‘কমিশন’ গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Back to top button