আইন-আদালত

ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনে মৃত্যুর ঘটনায় চার পরিবার পেলো ১ কোটি টাকা

ঢাকা, ২৯ জুলাই – সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে রাজধানীর শুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া চার জনের পরিবারকে ২৫ লাখ করে মোট এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) টাকা পরিশোধের বিষয়টি আপিল বিভাগকে অবহিত করেছেন রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব।

এই দুই আইনজীবী বলেন, পে-অর্ডারের মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহত পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে চার জনের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ লাখ করে টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়েছে। তবে অন্য এক মৃত ব্যক্তির পরিবার আগেই ক্ষতিপূরণের বিষয়ে হাসপাতালের সঙ্গে আপস করে নিয়েছে।

এর আগে গত ২৯ এপ্রিল ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চার জনের পরিবারকে মামলার অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ২৫ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৭ মে রাতে রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এসি বিস্ফোরণের আগুনে সূত্রপাত ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তখন ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদের মধ্যে ছিলেন চার জন পুরুষ এবং একজন নারী। পরে একই বছরের ৩০ মে রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এসি বিস্ফোরণের আগুনে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব।

ওই রিটের শুনানির পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের আইজি, ফায়ার ব্রিগেড কর্তৃপক্ষ ও রাজউকের কাছে পৃথক রিপোর্ট চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে দাখিল করা তিনটি প্রতিবেদনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার তথ্য উঠে আসে।

এরপর ২০২০ সালের ১৫ জুলাই রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের চার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহত মনিরুজ্জামানের পরিবার আদালতের বাইরে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করে নেওয়ায় সে বিষয়ে কোনও আদেশ দেননি হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সে আপিলের শুনানি নিয়ে আদালত এ মামলায় হাইকোর্টকে রুল জারির পাশাপাশি শুনানির নির্দেশনা দেন। ওই নির্দেশের ধারাবাহিকতায় মামলাটি পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত চার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ১৫ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পরে সে আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শেষে অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দেওয়া হয়।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/২৯ জুলাই ২০২১

Back to top button