ইসলাম

সব পাপাচারের মূল পার্থিব মোহ

পৃথিবী মানুষের চিরস্থায়ী আবাস নয়-এটা এক মহা সত্য। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কেউ এই সত্যকে অস্বীকার করতে পারেনি। তবে এই জীবনের পর আরও জীবন আছে কি না এটা নিয়ে বিশ্বাসের তারতম্য আছে। মুমিন বান্দাদের বিশ্বাস হলো, এই জীবনই আমাদের শেষ জীবন নয়; পরকাল নামক আরেকটি জীবন আমাদের সামনে আছে। আর পরকাল হলো এমন এক জীবন যার শুরু আছে শেষ নেই। সুতরাং পরকালকে প্রাধান্য দেয়া এবং দুনিয়াকে গৌণ হিসেবে গ্রহণের তাগিদ ইসলামে রয়েছে। প্রয়োজন মতো দুনিয়ার সঙ্গে জড়াবে, কিন্তু এর প্রতি চূড়ান্ত পর্যায়ে মোহগ্রস্ত হওয়া যাবে না। কারণ এর দ্বারা মানুষের সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়।

মানুষের জীবনে যত পাপাচার আছে সবকিছু মূল হলো এই পার্থিব মোহ। আমরা দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় এই দুনিয়া যে ছেড়ে যেতে হবে সেটা প্রায় ভুলেই যাই। আমরা দুনিয়াকে আরও বেশি পেতে চাই। যত পাই ততই চাইতে থাকি। কিন্তু এই দুনিয়া ঠিকই একদিন নিষ্ঠুর-নির্দয়ভাবে আমাদেরকে দূরে ঠেলে দেবে। পৃথিবীতে কোনো মানুষ এই দুনিয়ার সঙ্গে ভালোবাসা স্থাপন করে কোনোদিন টিকতে পারেনি; আমরাও নিশ্চিতভাবে পারবো না। রাসুল (সা.) বলেছেন, এই দুনিয়ার সঙ্গে ভালোবাসা স্থাপন করা যাবতীয় পাপাচার ও অবাধ্যতার মূল। মাওলানা রূমী (রহ.) সুন্দর বলেছেন, ‘দুনিয়ার ভালোবাসাও অন্তরে থাকবে এবং আল্লাহর ভালোবাসাও স্থান করে দেবেন; এ দুটো কখনও একসঙ্গে হতে পারে না। তাই এটা শুধু কল্পনা, অসম্ভব ও পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।’

আরও পড়ুন: নামাজের বৈজ্ঞানিক উপকারীতা

পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘হে লোকসকল! নিশ্চয় আল্লাহর অঙ্গীকার সত্য। সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদের ধোঁকা না দেয় এবং সেই প্রতারণাকারী যেন আল্লাহর ব্যাপারে তোমাদের প্রভাবিত না করে।’ শরিয়তের শিক্ষা হলো, দুনিয়াতে থাকো কিন্তু এর প্রতারণার শিকার হয়ো না। কারণ দুনিয়া পরীক্ষার জায়গা। এখানে যারা ভালো করবে, পরকালে এর ফল তারা ভোগ করবে। আর এখানে যারা হেসে-খেলে সময় পার করে দেবে তাদেরকে নিশ্চিতভাবে পরকালে পস্তাতে হবে। অনন্ত-অসীম পরকালে যেন কাউকে পস্তাতে না হয় এর ব্যবস্থা দুনিয়াতেই করে নেয়া উচিত। কারণ একবার এই দুনিয়া থেকে বিদায় হয়ে গেলে আর করার কোনো সুযোগ থাকবে না।

এন এইচ, ২৩ অক্টোবর

Back to top button