গর্ভবতী কর্মজীবী নারীদের জরুরী টিপস
গর্ভবতী অবস্থায় কাজ করা অত সহজ নয়। জেনে নিন কিভাবে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে, আবার আপনি আপনার কাজও চালিয়ে যাবেন স্বাভাবিকভাবে। বেশিরভাগ কর্মজীবী মহিলা গর্ভকালীন কাজ চালিয়ে যান। কোন কোন সময় গর্ভধারণ নতুন নতুন সমস্যা সৃষ্টি করে এবং কাজের সময়কে ব্যাহত করে। আপনাকে স্বাস্থ্যবতীও থাকতে হবে। আবার কাজও চালিয়ে যেতে হবে তৎপরতার সঙ্গে। বুঝতে শিখুন কিভাবে ছোটখাটো গর্ভকালীন সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে এবং জেনে রাখুন কখন আপনার কাজ আপনার গর্ভধারণকে এলোমেলো করে দিতে পারে।
বমি বমি ভাব ও বমি কিভাবে কমাবেন
এটাকে মর্নিং সিকনেস বলে। কাজের জায়গায় ও সময় কি করে সহজ করা যায় তার ক’টি উপায়।
এড়িয়ে চলুন : যে খাদ্য এক সময় আপনার খুব প্রিয় ছিল কিন্তু এখন সেগুলো আপনার বমি বমি ভাবকে জাগিয়ে তোলে সে খাদ্যগুলো পরিত্যাগ করুন।
ছোট ছোট নাস্তা করুন : মচমচে ছোট ছোট নাস্তা করুন। অফিসের অদূরে নাস্তার জন্যে বারে বারে অল্প অল্প করে নাস্তা করুন। আদা চা বেশ ভাল লাগতে পারে।
বেশি করে তরল খাদ্য খান : কাজের সময় টেবিলের কাছে একটা বোতল রাখুন। অল্প অল্প করে বার বার পান করুন।
আস্তে আস্তে ঘুম থেকে উঠুন এবং তৈরি হবার জন্যে বেশি সময় নিন। তাড়াহুড়ো করলে বমি বমি ভাব বেড়ে যেতে পারে।
কিভাবে ক্লান্তি এড়াবেন
আপনি অল্পতে ক্লান্ত অবসন্ন হতে পারেন। কারণ আপনার শরীর গর্ভধারণকে রক্ষা করতে অনবরত কাজ করে চলেছে এবং কাজের দিনগুলো বিশ্রাম পাওয়াও মুশকিল, তাই আয়রন এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য খান। ক্লান্তি গর্ভকালীন রক্তশূন্যতার জন্যে হতে পারে। তাই বেশি বেশি প্রোটিন এবং আয়রনসমৃদ্ধ খাদ্য যেমন রেড মাংস, মুরগির মাংস, সবুজ শাকসবজি বেশি করে খান। অল্প এবং বার বার বিরতি দিন।
অল্প এবং বার বার বিরতি দিন :
অল্প হাঁটুন এবং পায়চারি করুন। আপনার শক্তি ফিরে আসতে পারে। তাছাড়া আলো নিভিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করুন এবং পা দুটো তুলে দিন, দেখবেন আপনার অবসন্নতা চলে যাচ্ছে।
শারীরিক কাজ কমিয়ে দিন : বাড়ি এসে আলতো করে শুয়ে থাকুন। কাউকে ঠিক করুন, যে আপনার বাড়ির কাজে সাহায্য করবে। আপনার স্বাভাবিক রুটিনকে ঠিক রাখুন, কিছু হাঁটুন।
তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যান : ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। বাম কাত করে শুয়ে থাকুন। বাচ্চার শরীরে অধিক ব্লাড প্রবাহ হবে। বালিশ দিন পা এবং পেটের নিচে, আরাম পাবেন।
আরামদায়ক হোক আপনার হাঁটা চলা
যতই দিন যায় গর্ভধারণের পূর্ণতার দিকে এগোতে থাকে হাঁটা চলা বসা কিছুটা কষ্টকর হতে থাকে। মনে রাখতে হবে সব সময় কিছুটা হাঁটতে হবে। একটানা বসে থাকা একটানা হাঁটা বা একটানা কাজ নয়।
বসা : চেয়ারটি হবে হাতল অলা। একটা শক্ত সিট এবং পিছনে গদি থাকবে। চেয়ারটি যেন তার সমস্ত ভার বহন করতে পারে। যদি চেয়ারটিতে বসতে অসুবিধা হয় তবে একটা গদি বা ছোট বালিশ ব্যবহার করতে পারেন পিছনে।
দাঁড়ানো : অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। তাতে পায়ে রক্তের চাপ পড়ে ব্যথা হয়। সঙ্গে মাথা ঘোরা ঘোরা ভাব হতে পারে। যদি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতেই হয় তবে পালাক্রমে পা দুটোকে বিশ্রাম দিন একটি ছোট টুলের ওপর। আরামদায়ক জুতা এবং মোজা ব্যবহার করতে হবে।
বাঁকা হওয়া ও ভারোত্তোলন : হালকা জিনিস হলেও ভারোত্তোলনের ক্ষেত্রে খুব সাবধান হতে হবে আপনার পিছন এবং কোমড় সম্পর্কে। প্রথমে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে, কোমড় না, ভারি বস্তুটি তোলার আগে দেহের কাছাকাছি নিয়ে আসুন। পায়ের ওপর ভর রেখেই উত্তোলা করতে হবে কোমড়ের ওপর যেন চাপ না পড়ে। মোচড়ানো যাবে না। বেশি ভারি হলে অন্য কারোর সাহায্য নিন।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
কাজের ক্ষেত্রে ভাল করার জন্যে আপনি বেশি শক্তি ক্ষয় করলে আপনার স্বাস্থ্য এবং আপনার শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় শক্তি ঘাটতি পড়তে পারে। তাই কর্মক্ষেত্রের মানসিক চাপ যতটা কমানো যায়।
নিজের ওপর আস্থা অর্জন : কোন কাজ গুরুত্বপূর্ণ তার একটি তালিকা তৈরি করুন। নিজে কোনগুলো করতে পারবেন আর কোনগুলো অন্যকে দিয়ে করানো যায় ভেবে দেখুন।
মন খুলে কথা বলুন : অন্যের সাথে আপনার বন্ধু বা কর্ম সহযোগীদের সাথে আপনার হতাশার কথা খুলে বলুন।
শিথিল হোন : শিথিল হতে শিখুন। শিথিল হতে আপনি শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম (নৎবধঃযরহম বীপবৎপরংব) করতে পাবেন। হালকা শ্বাস নিন। ভাবুন আপনি খুব একটা আরামদায়ক জায়গায় আছেন।
কর্মক্ষেত্রের নিরাপদ বিষয় সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান রাখুন
আরও পড়ুন- যেসব খাবার খেলে দূর হয় অবসাদ
কর্মক্ষেত্রের কিছু বিষয় আপনার গর্ভধারণের ঝুকির মাত্রাকে বাড়িয়ে দিতে পারে
০ ক্ষতিকারক বস্তুর মধ্যে কাজ
০ অনেক ঘণ্টা ধরে কাজ
০ অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়ায়ে থাকা
০ বেশি ভারোত্তোলন
০ অনেক আওয়াজ
০ অনেক বড় মেশিনের কম্পন
০ অনেক মানসিক চাপ
আডি/ ২২ অক্টোবর