জাতীয়

কঠোর বিধিনিষেধেও চলবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

ঢাকা, ২৩ জুলাই – করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। আগামী ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। তবে এ সময়ে আগের মতোই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলবে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার অনুমিতও দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে এসব ফ্লাইটে বিদেশগামী অথবা বিদেশফেরত যাত্রী ছাড়া অন্যকে কাউকে পরিবহন করা যাবে না।

কঠোর বিধিনিষেধে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হলে তাকে শাস্তির আওতায় নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সরকার। বিধিনিষেধ চলাকালে জনগণকে সতর্ক থাকা, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ১৩ জুন বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই আদেশে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল ঈদের কারণে। ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে নতুন করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল ওই ঘোষণায়। ওই নির্দেশনার আলোকেই সকাল ৬টা থেকে বিধিনিষেধ শুরু।

কঠোর বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, বন্দরগুলো (বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল) এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিসগুলো। টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা নেওয়ার জন্য যাতায়াত করা যাবে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবেন।

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের ওপর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ৫ জুলাই যে নির্দেশনা দিয়েছে তা পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে ২০টি দেশের ওপর। দেশগুলো হচ্ছে, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, ভারত, নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, তিউনিশিয়া, বতসোয়ানা, মঙ্গোলিয়া, নামিবিয়া, পানামা, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, জর্জিয়া ও উরুগুয়ে।

এই ২০ দেশের বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে আসতে কোনও বাঁধা নেই। বাংলাদেশ আসতে হলে অবশ্যই ফ্লাইটের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর টেস্ট করে করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের করোনা টেস্ট করার প্রয়োজন নেই।

এদিকে আটটি দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে। এই ৮ দেশ থেকে সরাসরি অথবা অন্য কোনও দেশে ট্রানজিট হয়েও বাংলাদেশে আসা যাবে না। দেশগুলো হলো ভারত, নেপাল, বতসোয়ানা, মঙ্গোলিয়া, নামিবিয়া, পানামা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তিউনিশিয়া। তবে বাংলাদেশি নাগরিক ও প্রবাসী কর্মী যারা ১৫ দিনের মধ্যে এই দেশগুলো ভ্রমণ করেছেন, তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরতে পারবেন। তবে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

১২ দেশ থেকে আসলে ১৪ দিন সরকার নির্ধারিত হোটেলে নিজের খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। ফ্লাইটে ওঠার আগেই হোটেল বুকিং করতে হবে। দেশগুলো হলো আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কলোম্বিয়া, কোস্টারিকা, জর্জিয়া, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, উরুগুয়ে। তবে এসব দেশ থেকে কেউ যদি করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করে আসেন, তাহলে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না। বাড়িতে যেয়ে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।

জাহাজের নাবিক বা প্রকৌশলীদের কেউ যদি নিষেধাজ্ঞার (৮ দেশ) আওতাভুক্ত কোনও দেশে সাইন অফ করেন, তবে তিনি যথাযথ কাগজপত্র নিয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসতে পারবেন। এক্ষেত্রেও নাবিক ও প্রকৌশলীগণকে সরকার অনুমোদিত কোনও হোটেলে নিজ খরচে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

তথ্যসূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এস সি/ ২৩ জুলাই

Back to top button