ইউরোপ

ফ্রান্সে নিহত শিক্ষককে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হলো

প্যারিস, ২২ অক্টোবর- ‘ধর্ম অবমাননা’র ঘটনায় চেচেন তরুণের হাতে নিহত শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে মরণোত্তর লিজিয়ন অব অনার দিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। এটাই ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান।

বৃহস্পতিবার সারবন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জমায়েত হয়েছিলেন প্রায় চারশ মানুষ। সেখানেই সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা নিয়ে আসেন শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির কফিনবন্দি দেহ।

কিছুদিন আগে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন দেখিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ব্যাখ্যা করেছিলেন প্যাটি। সেই ‘অপরাধে’ তাকে হত্যা করে ১৯ বছরের এক চেচেন যুবক।

প্যাটিকে মরণোত্তর লিজিয়ন অব অনার দিয়ে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বলেন, “আমরা কার্টুন ত্যাগ করব না। আর প্যাটি জীবন দিয়েছেন ইউরোপীয় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে রক্ষা করতে গিয়ে। তিনি এই প্রজাতন্ত্রের মুখ।”

প্যাটির পরিবারের অনুরোধ ছিল, মরদেহ যখন আনা হবে, তখন যেন আইরিশ রক ব্যান্ড ইউ২-এর গান ‘ওয়ান’ বাজানো হয়। সেই অনুরোধ মতোই প্যাটির কফিনবন্দি দেহ আসার সময় বাজে গানটি।

এ দিকে পুলিশ ও আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় মোট সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তার মধ্যে দুজন ছাত্র। তারা অর্থের বিনিময়ে প্যাটিকে চিনিয়ে দিয়েছিলেন। হত্যাকারী ওই দুই ছাত্রকে জানিয়েছিল যে, সে প্যাটিকে শিক্ষা দিতে চায় ও মারধর করতে চায়।

পুলিশ এই হত্যার সূত্রে বেশ কয়েকটি জায়গায় হানা দিয়েছে। হামাসপন্থী একটি সংগঠনকে ভেঙে দিয়েছে, বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং প্যারিসের একটি মসজিদকে ছয় মাসের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।

কয়েক দিন আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মোহাম্মদ (সা.)-এর বিতর্কিত একটি কার্টুন নিয়ে আলোচনা করা ইতিহাস বিষয়ের ওই শিক্ষককে ফ্রান্সের রাস্তায় ছুরিকাঘাতে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। এতে জড়িত একজনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে।

স্থানীয় সময় ১৬ অক্টোবর বিকেল ৫টায় প্যারিসের উপকণ্ঠে একটি মাধ্যমিক স্কুলের পাশে ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। প্যারিসের উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরের অবস্থিত কনফ্লানস সেন্ট-অনরিনে নামক স্কুলটিতে ইতিহাস পড়াতেন প্যাটি।

পুলিশ জানায়, হামলাকারীকে প্রথমে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায় তারা। পরে গুলিতে আহত হয়ে তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন:  করোনায় আক্রান্ত জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, তাদের মুখোমুখি হওয়ার সময় ওই হামলাকারী ‘আল্লাহু আকবর’ (সৃষ্টিকর্তা সর্বশ্রেষ্ঠ) বলে চিৎকার করেন।

ফ্রান্সের সন্ত্রাস বিরোধী প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, ছুরিকাঘাতে শিক্ষক মৃত্যুর এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন জড়িত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে দেখছেন তারা।

পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ। একে ‘ইসলামিক সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষকদের রক্ষায় পাশে দাঁড়াতে পুরো জাতি প্রস্তুত এবং এই ‘আচ্ছন্নতাবাদ’ কখনো জিতবে না।

সূত্র : দেশ রুপান্তর

আর/০৮:১৪/২২ অক্টোবর

Back to top button