সিলেট-৩ উপনির্বাচনে প্রচারণা তুঙ্গে
সিলেট, ১৯ জুলাই- ভোটের লড়াইয়ের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে, প্রার্থীদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপও ততো বাড়ছে। সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনকে ঘিরে তিন প্রার্থী এখন প্রচারণায় তুমুল ব্যস্ত। করোনা মহামারির ভয়কে উড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন তারা। আরেক প্রার্থী শুধু যেন নামেই নির্বাচনে আছেন, তার ন্যুনতম কোনো তৎপরতা ও প্রচারণা নেই। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা তিন প্রার্থীদের সবাই বিএনপির নিজস্ব ভোটের দিকে চোখ করেছেন। তারা মনে করছেন, বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় তাদের কর্মী-সমর্থকদের ভোট আদায় করা গেলে জয় সহজ হবে। অবশ্য বিএনপির নেতারা বলছেন, ‘প্রহসনের’ এসব নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।
নির্বাচন কমিশনের সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যাওয়ায় সিলেট-৩ আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। আগামী ২৮ জুলাই এ উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপনির্বাচনের প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ইতোমধ্যেই শফিকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এসব প্রার্থীদের মধ্যে জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়াকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। তার পক্ষে কোনো সভা-সমাবেশ, প্রচারণা কিংবা পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন প্রত্যক্ষ করা যায়নি।
জানা গেছে, সিলেট-৩ আসনে দুবার প্রার্থী হয়ে পরাজয় বরণ করেন জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক। শফি আহমেদ চৌধুরী এ আসনে দুবার বিএনপিদলীয় সাংসদ ছিলেন। আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব এবারই প্রথমবার কোনো নির্বাচনে লড়ছেন। গত ২৫ জুন প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই এ তিন প্রার্থী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গোটা নির্বাচনী এলাকায় দৌড়াচ্ছেন তারা। প্রতিদিন করছেন উঠান বৈঠক, কর্মী সমাবেশ, প্রচারণা সভা।
হাবিব, আতিক ও শফির নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রচারণার শেষ দিকে এসে বিএনপির ভোট ব্যাংকের দিকে নজর দিয়েছেন তারা। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে, তাদের দলীয় প্রার্থীও নেই। ফলে দলটির কর্মী-সমর্থকদের নির্বাচনে টানতে তৎপর প্রার্থীরা। বিশেষ করে বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল সাধারণ মানুষের ভোট নিজের ব্যালটে আনতে চাইছেন তারা।
সাধারণ ভোটারদের মতে, বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় আওয়ামী লীগের হাবিবের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু দলীয় বিভেদ তাকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। এ আসনে উপনির্বাচনে প্রয়াত সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর স্ত্রী ফারজানা সামাদ দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে তিনি এখন নিরব। মাহমুদ উস সামাদের ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীরাও ভোটের মাঠে সরব নন। অন্যদিকে শফি চৌধুরী যদি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করার কথা বলে দলটির কর্মী-সমর্থকদের সহানুভূতি আদায় করতে পারেন, তবে লড়াইয়ে টেক্কা দিতে পারেন তিনিও, এমনটা মনে করছেন ভোটাররা। তাদের মতে, জাতীয় পার্টির আতিক সম্ভাবনায় পিছিয়ে আছেন। সিলেটে বর্তমানে জাতীয় পার্টি আছে অস্তিত্বের শঙ্কায়। দলীয় কোন্দল প্রায়ই প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসে। এ উপনির্বাচনে প্রার্থী দেয়া নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
জয়ের ব্যাপারে এ তিন প্রার্থীই ‘ব্যাপক সম্ভাবনার’ কথা বলেছেন। তাদের প্রত্যেকেরই দাবি, এলাকার মানুষ তাদের সাথে আছেন।
এদিকে, এ উপনির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার।
সূত্রঃ সিলেটভিউ২৪
আর আই