গাজীপুর

গাজীপুরে শ্রমিকদের আন্দোলনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ

গাজীপুর, ১৮ জুলাই – গাজীপুরে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে কয়েক দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসা স্টাইল ক্র্যাফ্ট পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৬ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ। এতে পুলিশসহ ছয় জন আহত হয়েছেন। রবিবার (১৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে লক্ষ্মীপুরা এলাকায় স্টাইল ক্র্যাফ্ট পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতাসহ তিন বছরের পাওনাদির দাবিতে গত ৬ জুলাই থেকে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে আসছেন। পাওনা পরিশোধের জন্য একাধিক তারিখ দিয়েও কথা রাখেননি মালিকপক্ষ। রবিবার সকালে কারখানার গেটে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে তারা কারখানার সামনে ঢাকা-গাজীপুর সড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং উভয় দিকে অ্যাম্বুলেন্সসহ শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও অবরোধ প্রত্যাহার করেননি। বিকাল পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে আরও বিক্ষুব্ধ হন তারা।’

শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসলাম হোসেন বলেন, ‘প্রায় আট ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধের জন্য চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ের দিকে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন শ্রমিকরা। এতে পুলিশের কনস্টেবল সাদিকুলসহ তিন জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৬ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান বলেন, ‘শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের ব্যাপারে ঢাকায় বিজিএমইএ’র সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের আলোচনা চলছে। অল্প সময়ের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কারখানার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

শ্রমিকরা জানান, স্টাইল ক্র্যাফ্ট পোশাক কারখানায় প্রায় সাড়ে ৭০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের চলতি বছরের মার্চ, মে, জুন এবং ২০২০ সালের মার্চ ও আগস্ট মাসের শতকরা ৫০ ভাগ, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর, অক্টোবর মাসের ৩৫ ভাগ, নভেম্বর মাসের ১৫ ভাগ বেতন পাওনা রয়েছেন।

এছাড়া কর্মচারীরা ইনক্রিমেন্টসহ চার বছরের ছুটি ও দুই বছরের ঈদ বোনাসের টাকা পাওনা রয়েছেন। তারা বেশ কিছুদিন ধরে এসব পাওনা পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু একাধিক তারিখ দিয়েও পরিশোধ না করায় আন্দোলন করছেন তারা। তাদের আন্দোলনে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

তথ্যসূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এস সি/ ১৮ জুলাই

Back to top button