জাতীয়

’এখন সুসময়, তাই কাক ও কোকিল চেনা বড় দুষ্কর’ : নানক

ঢাকা, ১৬ জুলাই – ২০০৭ সালের এক-এগারোর স্মতিচারণ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘দুঃসময়ে কে আপন কে পর তা চেনা যায়। এখন সুসময়, তাই কাক ও কোকিল চেনা বড় দুষ্কর।’

তিনি বলেন, ‘সাদা আর কালো মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। তাই, সামনে যত ষড়যন্ত্রই থাক, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।’

শুক্রবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

এক-এগারোর সময়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। সে দিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আজকে ১৬ জুলাই। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাইয়ের মাত্র ১১ দিন আগে নেত্রী আমাদেরকে সিগন‌্যাল দিলেন—আমাকে আর মির্জা আজমকে। ডিপ আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাও। প্রয়োজনবোধে ১০০ হাত মাটির নিচ দিয়ে হলেও বের হয়ে যাও। তোমাদেরকে কিন্তু ক্রসফায়ার করবে।’

শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্ব মহূর্তে তার ফোন করার স্মৃতিচারণ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘নানক, আজম আমি চলে যাচ্ছি। আমি একটি চিঠি রেখে যাচ্ছি দেশবাসীর জন্য। এই চিঠিটি সারা বাংলাদেশে প্রচার করবে, আমাদের কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেবে।’

‘তিনি আরেকটি কথা বলেছিলেন, এটাই হয়ত তোমাদের সঙ্গে আমার শেষ কথা আজকে। আমাকে কী করবে, আমি জানি না। তবে বিশ্বাসঘাতকার আর কী দেখেছ? আজকে আমার গ্রেপ্তারের পরে দেখবা, আমার আওয়ামী লীগের নেতারা কী পরিমাণ বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে। তবে সতর্ক থাকো। আমি তোমাদের ওপর অর্থাৎ কর্মীদের ওপর ভরসা রেখে চলে গেলাম।’

তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার লেখা চিঠিটি পড়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে আমি স্যালুট জানাই। আপনারা শত বাধা-বিপত্তির মুখে, কিংস পার্টি গঠন হচ্ছিল তার মধ্যেও ২৫ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন নেত্রীর মুক্তির জন্য।’

নানক বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৫ সালে একটি সরকার ক্ষমতায় ছিল। বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার দায়িত্ব নিয়ে সে সরকার গঠন হয়েছিল। দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলে পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশমাতৃকাকে নিয়ে আসার জন্য একটি সরকার গঠিত হয়েছিল।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি ওই অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রান্তে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা। সভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি
এস সি/ ১৬ জুলাই

Back to top button