ফুটবল

চাপ এখন নেইমারের ওপর

কত ট্রফিই না জিতেছেন বর্ণিল ক্যারিয়ারে। কিন্তু দেশের হয়ে একটা আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতা হচ্ছিল না লিওনেল মেসির। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হয়েছে তার। কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে ২৮ বছর পর মেজর টুর্নামেন্টে সেরা হয়েছে আর্জেন্টিনা। মেসির হাতে উঠেছে দেশের হয়ে প্রথম কোনো শিরোপা।

এবারের কোপার আগে আর্জেন্টিনা সবশেষ শিরোপা পেয়েছিল ১৯৯৩ সালে। এরপর কত বসন্ত পেরিয়েছে। ডিয়েগো ম্যারাডোনার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে মেসির মতো তারকাকে পেয়েছে আর্জেন্টিনা। যিনি দলকে দুই বার কোপা এবং একবার বিশ্বকাপের ফাইনালে নিয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন।

এবারের কোপা অবশ্য দুহাত ভরে দিয়েছে তাকে। তাই ক্লাব ক্যারিয়ারের পাশাপাশি নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়েও এখন গর্ব করতে পারেন মেসি। যদিও এখন একটা বিশ্বকাপ জয় হবে তার মূল লক্ষ্য।

দেশের হয়ে একটা ট্রফি যে চাপ ছিল, সেই পাহাড় সম চাপ থেকে মেসি আপাতত অনেকটাই মুক্ত।

তবে যে চাপ মেসি এত দিন বইয়ে বেড়িয়েছেন, সেই চাপটাই যেন এখন ঘিরে ধরতে শুরু করেছে মেসিরই এক সময়ের ক্লাব সতীর্থ নেইমারকে। যাকে বা যার দলকে হারিয়েই এবার মেসি নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছেন।

মেসির সাফল্যে নেইমার নিজেও যে খুশি, তা এক রকম প্রমাণিত। ফাইনাল শেষে মাঠেই বন্ধু মেসির সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন নেইমার। বলেছেন, মেসির এই মুহূর্তটার জন্য অপেক্ষায় ছিল ফুটবল।

কিন্তু বন্ধুর ওপর থাকা চাপটা যে নিজের ওপর আসতে যাচ্ছে, সেটি কি অবগত নেইমার?

প্রত্যাশার প্রবল চাপ নিয়ে মেজর ‍টুর্নামেন্টে খেলতে গেছেন মেসি। বারবার ফিরেছেন ব্যর্থ হয়ে। আর চাপ ততই ঘনীভূত হয়েছে তার ওপর।

নেইমার অবশ্য দেশকে অলিম্পিকে দুইবার পদক উপহার দিয়েছেন। ২০১২ অলিম্পিকে রুপা এবং ২০১৬ অলিম্পিকে স্বর্ণ জয় করেন দেশের হয়ে। এ ছাড়া ২০১৩ সালে দেশের হয়ে কনফেডারেশনস কাপও জয় করেন।

তবে সান্তোস থেকে বার্সেলোনায় পাড়ি দেওয়ার পর থেকেই নেইমারের ওপর প্রত্যাশার পারদ ছিল অনেক ওপরে। ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মধ্যমণি ছিলেন তিনি। তবে ইনজুরির কারণে সেমিফাইনালের আগেই ছিটকে যেতে হয় তাকে।

সেমির মঞ্চে ব্রাজিল ৭-১ গোলের দুঃস্বপ্নে পুড়ে জার্মানির বিপক্ষে। অন্যদিকে মেসি তার দেশকে নিয়ে যান ফাইনালে।

২০১৮ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালেই ব্রাজিলকে থামিয়ে দেয় বেলজিয়াম। যে ম্যাচে নেইমার খেলেছিলেন পুরো ৯০ মিনিট।

২০১৯ সালে অবশ্য কোপা আমেরিকা জয় করে ব্রাজিল। তবে চোটের কারণে নেইমার ছিলেন না স্কোয়াডে।

২০১৭ সালে বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে পাড়ি দেন নেইমার। তার সমালোচকেরা এরপর থেকে আরো বেশি মুখর হতে শুরু করে। প্যারিসের ক্লাবটিকে যে এখনো চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাতে পারেননি। নিজে পাননি ব্যালন ডি অরের মতো স্বীকৃতিও। যা অর্জন করাই ছিল তার বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে পাড়ি দেওয়ার মূল লক্ষ্য।

এখন পিএসজির হয়ে যদি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বা ব্রাজিলের হয়ে কনফেডারেশন কাপের চেয়ে বড় কিছু জিততে না পারেন, তবে মেসির মতোই জ্বালা সহ্য করতে হবে নেইমারকে।

সূত্র : দেশ রূপান্তর
এন এইচ, ১৬ জুলাই

Back to top button